অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ব্রোওলার মুরগি পালন ও পরিচর্যা

ব্রোওলার মুরগি পালন ও পরিচর্যা

ব্রয়লার এক বিশেষ ধরনের মুরগি যার রহস্য পৃথিবীর কেবল চারটি দেশই জানে এবং এই চারটি দেশই সমস্ত জগতের ব্রয়লার মুরগির ব্যবস্থা নিয়ন্ত্র করে। ব্রয়লার আর সাধারণ পাঁচটা মরগির মতো। তবে খুবই উচু জাতের যাদের সৃষ্টি করা হয়েছে প্রচন্ড নির্বাচন এবং বংশগতি ধারার বিশেষ ক্রম অনুসারে।

ব্যবসায়ের জন্য ব্রয়লার মুরগি নির্বাচন

  • (১) একদিনের বাচ্চার ওজন হবে ৩৬ থেকে ৪০ গ্রাম। দেখা গেছে এদিনের বাচ্চার দেহের ওজন যদি ভাল হয় তবে বেচার সময় ব্রয়লার মুরগির ওজন ভালই দাড়াবে।
  • (২) বংশগতি ধারার ভাল ক্রিয়াকর্মঃ যদি ভাল বংশগতি ধারার মুরগির বাচ্চা না হয় তবে ব্যবসায় খুব এটা সুবিধা হবে না। প্রায়ই সময় দেখা যায় একদল ব্রয়লার মুরগি অন্য দলের চেয়ে ভাল বাড়ে, বেশি সংখ্যায় বাছে, সুলক্ষণযুক্ত, সমান এবং বেশ ভালো পরিমাণে দেহে মাংস লাগায় সুষম খাদ্য খাওয়ার অনুপাতে । যে বাচ্চা মুরগির প্রেরক অবশ্যই শৃঙ্খলের কায়দার মুরগির বাচ্চা দিয়ে যাবে। এই নিয়মের ব্যতিক্রম হলেই সম্পূর্ণ ব্যবসাটি মার খাবে। আরো ভাল হয় যদি হ্যাচারি সংস্থা সমপ্রসারণ এবং কারিগরি জ্ঞান দরকার পড়লে দিতে পারে।
  • (৩) সুষম খাদ্য খুব উচুদের হওয়া চাই। অর্থাৎ খাওয়ার অনুপাতে দেহে যেন মাংস লাগে। খুব তাড়াতাড়ি বাড়ার জন্য ব্রয়লারের দরকার একই সঙ্গে উচ্চু পর্যায়ে আমিষ এবং শক্তি বা বেশি তাপ দিতে পারে এমন খাবার। ০-৬ সপ্তাহের ব্চাচার জন্য ব্রয়লার সুশস খাদ্যে থাকবে প্রতি কেজি খাবারে আমিষ ২২.২৪% , বিপাকীয় তাপ ২৯০০-৩০০০ কিলোক্যালরি। ব্জারে যাবার আগে ব্রয়লার মুরগির সুষম কাদ্যে থাকবে ১৯-২০%, বিপাকীয় তাপ ৩০০০/৩২০০০ কিলো ক্যালরি প্রতি কেজি খাবারে। ব্রয়লার বাজারে যাবার আগের খাবার ৫-৬ সপ্তাহ বয়সে দেওয়া যেতে পারে।
  • (৪) আমি ষ বিশেষ করে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলির মধ্যে লাইসিন এবং মেথিও নাইন খবুই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এরা মুরগির বাড়ের জন্য সাহায্য করে। খাবারকে মাংসে পরিনত করে। ফলে ব্রয়লার ব্যবসায়ে পয়সা আসে।
  • (৫) ব্রয়লার মুরগির খাবারে মোটা আশের শতকরা হার ৬ এর বেশিদ কখনোই হবে না।
  • (৬) ভিটামিন A, B2, D3, B12 এবং K ভীষন প্রয়োজনীয়।
  • (৭) পটাসিয়াম, আয়োডিন, ম্যাঙ্গানিজ সালফেট এবং জিঙ্ক কার্বনেট পৃথকভাবে ভাল করে মিশিয়ে মুরগিকে খাওয়ানো উচিত।
  • (৮) ব্রয়লার মুরগির খাবারে বীজঘ্ন নামমাত্র পরিমাণে মেশানো উচিত। লাভটা এই হবে বাচ্চা মুরগির দেহে সুপ্তভাবে যদি কোন রোগ থেকে থাকে তবে এই বীজঘ্ন খাওয়াবার দরুন মুরগির দেহে চট করে রোগাক্রমণ ঘটবে না।

ভাল লাভ করতে যা করনীয়

ব্রয়লার মুরগি খাবারে এলো আর গেল নীতি মানাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পলে খামারে একই বয়সের মুরগি থাকবে। এবং এ বয়সী মুরগি থেকে অপর বয়সী মুরগিদের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারবে না।

খামার ঘর পূর্ব পশ্চিম দিক করে হবে। বায়ু চলাচল ব্যবস্থা ভারো থাকা দরকার। মুরগির ঘরগুলির পরস্পর দূরত্ব হবে ১১-১২ মিটার (৩৫-৪০ ফুট)।

খামার বাড়ি তৈরী করা

ঘরে মুরগি আসার আগে ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, ব্লো ল্যাম্প দিয়ে ফাক ফোকরগুলিতে পোকা মাকড় (উকুন, ছোট বড় এটুলি) মেরে দেওয়া। বাচ্চা মুরগির জায়গা গরম ব্যবস্থা, মুরগি আসবার ৪৮ ঘন্টা আগে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে নেওয়া উচিত।ব্রুডারকে খবরের কাগজ দিয়ে ঘিরে দিতে হবে। তাপমাত্রা হওয়া দরকার ৩৫০ সেঃ (৯৫০ ফাঃ)।

ব্রয়লার বাচ্চার জন্য মেঝেতে জায়গা দিতে

বাচ্চা পিছু জায়গা দিতে হবে ৪৫ বঃ সেমি (৭ বাঃ ইঞ্চি)। কখনোই যেন গুচ্ছের মুরগি গুদামজাত করা না হয়। বেশি বচ্চার সংখ্যা হলে পরস্পরকে কামড়া কামড়ি করবে। খাবার এবং জলর জন্য লড়াই করবে ফলে বাচ্চা দুর্বল হয়ে পড়বে। এতে ক্ষতি হবে ব্যবসার।

খাবার এবং জল এর  জায়গা

প্রথম কদিন ডিম নেবার কাটুনে কাবার দেওয়া হলে চলবে। বাচ্চা পিছু খাবার জায়গা দিতে হবে ২.৫ সিমে (১")। এই ব্যবস্থা চলবে বাচ্চার ১ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত। প্রথম প্রথম খাবারের জায়গা পুরো ভরে দিলে চলবে। কিন্তু একটু বড় হয়ে যাবার পর খাবারের জায়গা আধা আধি ভর্তি করতে হবে। এভাবে চললে খাবার নষ্ট কম হবে। দিনে ৪ বার খাবারের জায়গায় দখাবার দিলে চলবে। খাবারের জায়গা বার বার ভরে দিলে মুরগি বাড়ে ভাল। ৪ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত মুরগি প্রতি খাবারের জায়গা হবে ৫ সেমি। পরে বেড়ে সেটা দাড়াবে ৭.৫ সেমি (৩")। সমস্ত দিনভর বাচ্চাদের পরিষ্কার ঠান্ডা জল জুগিয়ে যেতে হবে। জলর জায়গা বেশি সংখ্যায় দিতে হবে। মনে রাখতে বাচ্চা ডিমপাড়া মুরগি থেকে ব্রয়লার বাচ্চা বেশি জল খায়। গরমকালে, বিশেষ করে গরম প্রবাহ চললে মুরগি প্রচুুর জল খেয়ে নিজেকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করে।

শাবক ঘর এবং শাবক ঘরের তাপমাত্রা

বাচ্চার ঝাঁক আসবার অন্তত ৪৮ ঘন্টা আগে ঘরটি পরীক্ষা করতে হবে। পট্রথম সপ্তাহে শাবক ঘরের তাপমাত্রা হবে ৩৫০ সেঃ (৯৫০ ফাঃ)। শাবক ঘরের তাপমাত্রা প্রতি সপ্তাহ ৫০ ফাঃ বা ২.৮০ সেঃ হিসেবে কমানো যেতে পারে। সেটা অবশ্য নির্ভর করবে বাইরের আবহাওয়ার ওপর।

শীতকারীন পরিচালন ব্যবস্থা

বাচ্চা মুরগির বিছানা ৫" থেকে ৬" গভীর হবে। সুবিধা হলেই বিছানার ওপরে নতুন একটা বিচুলি/ খড়ের আস্তরণ দিয়ে দেওয়া ভাল। সপ্তাহে ঙ্গ বার কাটা কোদাল দিয়ে বিছানা ঘেটে দেওয়া ভাল। বিছানার জলীয় ভাব বেশি হলে চুন দিয়ে নেওয়া উচিত। চুন অ্যামোনিয়া গ্যাস শুষে নেয়।

ব্রয়লার মুরগির বাজার

ব্রয়লার মুরগির পৃথিবীর জুড়ে এটাই সমস্যা। ৫০, ১০০, ২০০, ৩০০, ৫০০, ১০০০ বা তারও বেশি শৃঙ্খল বা চেইন নিয়মে বিক্রি হয় বলে বাজার আগে থেকেই তৈরি করে নিতে হয়। অর্থাৎ কতজন খাবে জেনে নিয়ে ভাত বসানোর মত। হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, ক্যান্টিন, হোস্টেল প্রভূতি শৃঙ্খল নিয়ংমে ব্রয়লার বড় মুরগি নিয়ে থাকে। এলাকা যদি খুব ঘনবসতিসম্পন্ন হয় তবে শৃঙ্খলেরত খুব জোর ৫০ থেকে ১০০টি মুরগি ২ দিনে বিক্রি করা সম্ভব। যেখানে সুনিশ্চিত বাজার আছে সেখানে ৩০০ গ্রাম, ৫০০ গ্রাম এবং কেজি হিসেবেও বিক্রি করা যেতে পারে।

ব্রয়লার মুরগির সুষম খাদ্যের রকমফের

  • (১) পাউডার বা ধুলোর মত
  • (২) গুলি বা ওষুধের মত ছোট ছোট ট্যাবলেটের আকারে। সাধারণত ধুলোর ম্যাস করেই ব্রয়লার মুরগিকে খাওয়ানো হয়। বিভিন্ন পদ্ধতিতে খাইয়ে দেখা গেছে ৬ থেকে ১১% খাবারকে মাংসে পরিণত করা হয়েছে এবং শেষমেষ খামারির লাভ হয়েছে ৩ থেকে ১২% । অবশ্য এটা উৎপাদনের দিক থেকে । ইওরোপে ৯০% মত খাবার বস্তু ফের গুলির আকারে পরিবেশন করা হয়। আমেরিকায় ৫০% সংস্থা মুরগির সুষম খাদ্য ফের গুলির আকারে পরিবেশণ করে থাকে।

ব্রয়লার মুরগির ব্যবসায়ে সতর্কতা

ব্রয়লার মুরগির ব্যবসায়ে নিচের সতর্কগুলি মনে রাখা উচিতঃ

  • (১) ব্রয়লার উৎপাদনে ৬০ থেকে ৬৫% টাকা খাবারের পেছনে খরচ হয়।
  • (২) সুষম খাদ্যে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় জিনিস খাওয়ালে অতিরিক্ত দাম পাওয়া যায় না। কিন্তু গরম আবহাওয়া বা প্রবাহে আপনাকে অতিরিক্ত চর্বি বা তেল দিতেইত হবে।
  • (৩) ব্রয়লার মুরগি তার সুষম খাবারের ৬৪% আমিষ দেহের কাজে লাগাতে পারে। ব্রয়লারের প্রয়োজনীয় আমিষ তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-
    • (ক) কলা বৃদ্ধির জন্য; ব্রয়লার মুরগির শরীরে ১৮% আমিষ আছে।
    • (খ) দেহের ক্ষয় রোধের জন্য; ব্রয়লার প্রতিদিন তার দেহের কেজি হিসেবে ওজনের ১৬০০ মিঃ গ্রাঃ আমিষ ক্ষয় করে।
    • (গ) পালক গঠনের জন্য; ব্রয়লার মুরগির পালকে ৮২% আমিষ আছে এবং গড়ে পালকের ওজন সমস্ত দেহের দ৭০%। গরমকালে ব্রয়লার সুষম খাদ্যে বেশি আমিষ দরকার শীতকালের তুলনায়। কারণটা হল মুরগি গরমকালে কম কায়।  ঠিক যতটুকু অ্যামাইনো অ্যাসিড দরকার ঠিক ততটুকুই ব্রয়লার মুরগিকে দিতে হবে। কমও নয়, বেশি তো নয়ই। যেহেতু বেশি পরিমাণে অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিড দেহের ক্ষতি করে। কম অ্যামইনো অ্যাসিড আবার দেহের বৃদ্ধিকে রোধ করে দেবে। মাদি ব্রয়লার মুরগির চেয়ে মদ্দা ব্রয়লার মুরগি তাড়াতাড়ি বাড়ে। সুতরাং খামারের ভালর জন্য মাদি মদ্দা একসঙ্গে না পালন করে আলাদা আলাদা করা লাভজনক। প্রথম চার সপ্তাহ মদ্দা মাদিদ ব্রয়লার মুরগির আমিষের প্রয়োজন একই রকম। ৪ সপ্তাহ পরে মদ্দা ব্রয়লার মাদির চেয়ে ২% থেকে ৪ % বেশি আমিষের দরকার হয়। মাদিকে বেশি আমিষ দিলে সেটা খুব একটা কাজে আসে না।

ব্রয়লার মুরগির জন্য খনিজ এবং ভিটামিন

সত্যিকথা বলতে পরিমাণ এবং উৎকর্ষকতা দুটো ব্রয়লার মুরগির সুষম খাদ্যে দরকার। আরো দরকার খনিজ পদার্থের পরস্পরের মধ্যে সমঝোতা। এই সমঝোতা অবশ্য খাদ্যের উপাদানের সঙ্গেও থাকা দরকার। খনিজ পদার্থের বেশি বা কম হওয়া দুটোই খনিজ পদার্থের মুল উদ্দেশ্য দেহের বাড়কে ব্যাহত করবে। ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের মধ্যে সহযোগিতা খুবই দরকারী। খাবারের সমস্ত ক্যালসিয়াম যেন ১% গন্ডি কখনো না পেরিয়ে যায়।

ভিটামিন খাদ্য বিপাক এবং বিশ্লেষণ বিশেষ সহযোগিতা দেখায় । ফলে মুরগির দেহের বাড় ঠিক থাকে। রোগ ভোগ কম হয়। প্রতিটি ভিটামিনের আলাদা আলাদা কাজ আছে যা একই বইতে পরির্বতে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

ব্রয়লার খামারের পরিচালন ব্যবস্থা

  • (ক) খাবারকে দেহে লাগাবার ব্যবস্থাঃ
    • এটা বের করা হয় ব্রয়লার মোট যে বারটা খেল তাকে ব্রয়লার মুরগির কতটা ওজন পেল সেই ওজনকে দিয়ে ভাগ করে।
  • (খ) প্রতি কেজি ব্রয়লার ওজনের জন্য কত মুল্যের খাবার খেলঃ
    • এটা বের করা হয় খাবারকে দেহে লাগাবার অনুপাতকে প্রতি কেজি খাবারের মূল্যকে গুণ করে।
  • (গ) মোট সুবিধা প্রতি একক মেঝের জায়গা হিসেবেঃ
    • এটা বের করা হয় মোট খরচকে (বাচ্চার দাম, খাবার, ওষুধ পত্র) ব্রয়লার মুরগি বেচার আয় থেকে এবং বিয়োগফলকে মেঝের বর্গফুটকে ভাগ করে। শতকরা বাচার হার = ১০০-শতকরা মৃতু্যর হার। উৎপাদন সংখ্যা (ইংরেজিতে বলে production number) একটি আন্তর্জাতিক সংখ্যা। এই সংখ্যার দ্বারা কারিগরির ব্যাপারে অনেক কিছু জানা যায়।
  • ব্রয়লার পালনে কিছু সমস্যা ও এর প্রতিকার

    ব্রয়লার লালন পালনে খামারি ভাইয়েরা মাঝে মধ্যেই নানা রকম সমস্যায় পড়েন। সময় মতো এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য খামারিকে চৌকস না হয়ে উপায় নেই। একজন চৌকস খামারি হিসেবে ব্রয়লার পালনে যেসব বিষয়ে নজর রাখতে হবে চলুন সেটা জেনে নিই।

    ব্রয়লার পালনে সমস্যা

    ব্রয়লার পালনে খামারি ভাইয়েরা যেসব সমস্যায় পড়েন সেগুলো হলোন্ধ

    • ১. গামবোরো রোগ,
    • ২. ওজনে পার্থক্য (একই বয়সের বাচ্চা কিছু দিন পর ছোট-বড় হওয়া),
    • ৩. সমন্বয়হীন বাজারব্যবস্খা,
    • ৪. খামারিদের ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা।
    পামবোরো রোগ

    খামারি ভাইয়েরা গামবোরো রোগ নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। গামবোরো ভাইরাসের কারণে হয়। এই রোগের কার্যকরী কোনো চিকিৎসা নেই। তবে সময়মতো টিকা দেয়া থাকলে রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। এই রোগের আক্রমণ যদি ঘটেই থাকে তাহলে উন্নত ব্যবস্খাপনার মাধ্যমে মৃত্যুহার কিছুটা কমানো যায়। এই রোগে আক্রান্ত মুরগি খাদ্য ও জল খাওয়া বìধ করে দেয়, পালক উসকো-খুসকো দেখায়। সাদা পাতলা ও দুর্গìধযুক্ত পায়খানা করে। শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ে, হাঁটতে পারে না। অবশেষে মারা যায়। তবে এই রোগে মৃত্যুহার ৩০ ভাগের বেশি হয় না। থাইয়ের গোশতে রক্তের ছিটা দেখা যায়। একই বয়সের বাচ্চা প্রথমে বড় এবং পরে ছোট হয়ে যায়, বাচ্চা কাটলে ভিতরে রক্তের ফোঁটা দেখা যায়।

    চিকিৎসা

    এই রোগের কার্যকরী কোনো চিকিৎসা নেই। প্রতিরোধ ব্যবস্খাই একমাত্র উপায়। গামবোরো রোগ দেখা দিলে মুরগির ঘরে খাদ্য ও জলর পাত্র বাড়াতে হবে। কারণ এই রোগে খাবারের প্রতি অরুচি হওয়ায় না খেয়ে দুর্বল হয়ে মুরগি মারা যায়। তাই খাদ্য ও জল পাত্র এমনভাবে দিতে হবে যাতে ঘুরলেই খাদ্য পায়। এই রোগে অরুচি, ডিহাইড্রেশন এবং মুরগি না খেয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে বলে জলতে ভিটামিন সি, স্যালাইন ও গ্লুকোজ মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

    ছোট-বড় হওয়া

    প্রায়ই দেখা যায় একই ব্যাচে একই বয়সের ব্রয়লার বাচ্চা কিছু দিন পর কতকগুলো বেশ ছোট হয়ে গেছে। এর জন্য দৃশ্যমান অদৃশ্যমান অনেক কারণ জড়িত। যেমনন্ধ কৌলিকাত্ত্বিক কারণ, পরিবেশগত ও ব্যবস্খাপনাগত কারণ। দৃশ্যমান বা পরিবেশগত কারণের মধ্যে প্রথম থেকেই প্রয়োজনের তুলনায় কম খাদ্য ও জলর পাত্র থাকা। কারণন্ধ প্রথম সপ্তাহে বিশেষ করে এক-তিন দিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চার চলাচল সীমিত থাকে এবং খাদ্য না চেনার কারণে খাদ্য খাওয়ায় তেমন প্রতিযোগিতা থাকে না। তাই এই সময়ে যেসব বাচ্চা এক বা দুই দিন খাদ্য ভালোভাবে খেতে পারে না সেগুলোই দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে পরে খাদ্য খাওয়া প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে ছোট হয়ে যায়। পুরুষ বাচ্চার দৈহিক বৃদ্ধি স্ত্রী বাচ্চার চেয়ে ২০-২৫ ভাগ বেশি হওয়ায় স্ত্রী বাচ্চা ছোট হয়। মিশ্রিত গ্রেডের বাচ্চা এক সাথে পালন করা। বিভিন্ন বয়সের মুরগির ডিম এক সাথে ফুটানো হলে পুলের ডিমের বাচ্চা ছোট হয়। ব্রুডিং পিরিয়ডে কাáিক্ষত তাপ না পাওয়া।

    প্রতিকার

    মিশ্রিত গ্রেডের বাচ্চা না কিনে একই এ বা বি গ্রেডের বাচ্চা কিনতে হবে। বাচ্চা ছোট-বড় দৃশ্যমান হওয়ার সাথে সাথে আলাদা করে বিশেষভাবে যত্ন নিতে হবে। কাáিক্ষত পরিমাণ খাদ্য ও জলর পাত্র দিতে হবে।

    খামারিদের ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা

    রোগ চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম এ কথাটা মুরগি পালনের ক্ষেত্রে বেশি যুক্তিযুক্ত। অনেক খামারি জেনে না জেনে রোগ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ান, যা মোটেও ঠিক না। অসুখ না হলে ওষুধ খাওয়ানো ঠিক নয়। রোগ প্রতিরোধের জন্য সময়মতো টিকা দিতে হবে। সুস্খ মুরগিকে রোগ প্রতিরোধের নামে ওষুধ খাওয়ানোর ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এমনকি রোগ প্রতিরোধ শক্তিও কমে যেতে পারে। তাই প্রতিরোধের জন্য ওষুধ না খাইয়ে সময় মতো টিকা দিতে হবে।

    লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিচালক, বংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট।

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/21/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate