অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

চীনাবাদাম রোগ নিয়ন্ত্রণ

টিক্কা বা পাতায় দাগ (Tikka or leaf spot) রোগ

রোগের কারণ

সারকোস্পোরা এ্যারাচিডিকোলা (Cercospora arachidicola) ও সারকোস্পোরা পারসোনেটা (Cercospora personata) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তার

কনিডিয়া বাতাস ও বৃষ্টির পানির মাধ্যমে এক স্থান হতে অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। অপেক্ষাকৃত উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া এবং প্রবল বায়ু প্রবাহ এ রোগ বৃদ্ধির সহায়ক।

রোগের লক্ষণ

  • বীজ গজানোর এক মাসের মধ্যে সারকোস্পোরা এ্যারাচিডিকোলা নামক ছত্রাকের আক্রমন পরিলক্ষিত হয়।
  • সারকোস্পোরা এ্যারাচিডিকোলা ছত্রাকের আক্রমণে পাতায় সৃষ্ট দাগগুলি লালচে বাদামী বা কালো রঙের হয়।
  • এগুলো আকারে গোল বা অনিয়মিত এবং অনেক বড় হয়।
  • দাগগুলো হলুদ রঙের বলয় দ্বারা আবৃত থাকে।
  • দাগগুলো নানা আকারের হয় এবং পাতার উপর ইতস্তত ছড়িয়ে থাকে।
  • গাছের বয়স ৫৫-৬০ দিন হলে সারকোস্পোরা পারসোনেটা নামক ছত্রাকের আক্রমণে পাতার নীচের পৃষ্ঠে দাগ দেখা যায়।
  • সারকোস্পোরা পারসোনেটা ছত্রাকের আক্রমণে পাতায় ছোট ছোট গোলাকার ধুসর বাদামী হতে কালো রঙের দাগ সৃষ্টি হয় এবং দাগগুলো একত্রিত হয়ে বড় হয়।
  • উভয় ছত্রাকের ক্ষেত্রেই গাছের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দাগের সংখ্যা বেড়ে যায়; পাতা ঝলসে যায়, ফলে গাছ ফ্যাকাশে দেখায় ও ফলন কমে যায়।
  • পাতার দাগ রোগের আক্রমনের ফলে গাছের বাদাম পরিপুষ্ট হতে পারে না এবং দানা আকারে ছোট হয়।

tikka1

tikka2

আগাম পাতায় দাগ (C. arachidicola) নাবী পাতায় দাগ (C. personata)

tikka3

tikka4

চিত্র: চীনাবাদামের টিক্কা বা পাতায় দাগ রোগের লক্ষণ

রোগের প্রতিকার

  • রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে, যেমন বারি চীনাবাদাম ৬, বারি চীনাবাদাম ৭, বারি চীনাবাদাম ৮, বারি চীনাবাদাম ৯ এবং বারি চীনাবাদাম ১০।
  • ফসলের পরিত্যক্ত অংশ, আগাছা এবং আবর্জনা পুড়ে ফেলতে হবে।
  • জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করলে রোগের প্রকোপ কম হয়।
  • সুষম সার ব্যবহার ও সময়মত সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম অথবা প্রোপিকোনাজোল (যেমন-টিল্ট ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।

গোড়া পচা/কান্ড পচা (Foot and root rot/Stem rot) রোগ

রোগের কারণ

স্ক্লেরোশিয়াম রফসি (Slerotium rolfsii) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তার

আর্দ্র আবহাওয়া এ রোগ বিস্তারে সহায়ক। মাটিতে বসবাসকারী ছত্রাক গুটিকা এ রোগ সৃষ্টি করে। আক্রান্ত বীজ, পানি, পাখি, কৃষি যন্ত্রপাতি দ্বারা এক স্থান হতে অন্য স্থানে ছড়ায়। উচ্চ তাপমাত্রা (২৫ সেঃ-এর বেশী) রোগ বিস্তারের জন্য অনুকুল অবস্থা।

রোগের লক্ষণ

  • এ রোগ গাছের যে কোন অবস্থায় আক্রমণ করতে পারে।
  • সাধারণত গাছের যে সকল অংশ মাটির কাছাকাছি বা নিচে থাকে সে অংশ সমূহ এ রোগে আক্রান্ত হয় ।
  • গাছের গোড়া ও কান্ডের সংযোগস্থলে বাদামী হতে কালো দাগের সৃষ্টি হয়।
  • এ দাগ পরে কান্ডের উপরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
  • আক্রান্ত স্থানে ছত্রাকের সাদা মাইসেলিয়া এবং সরিষার দানার মত স্ক্লেরোশিয়া লক্ষ্য করা যায়।
  • গাছের মূল শিকড় আক্রান্ত হলে গাছ ঢলে পড়ে ও মারা যায়।

চিত্র: চীনাবাদামের গোড়া পচা/কান্ড পচা রোগের লক্ষণ

রোগের প্রতিকার

  • রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে।
  • জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে।
  • ফসলের পরিত্যক্ত অংশ, আগাছা এবং আবর্জনা পুড়ে ফেলতে হবে।
  • সুষম সার ব্যবহার করতে হবে।
  • অর্ধকাচা মুরগির বিষ্ঠা হেক্টর প্রতি ৫ টন হারে বীজ বপনের ২-৩ সপ্তাহ আগে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর গাছের গোড়ায় মাটিতে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

মরিচা (Rust) রোগ

রোগের কারণ

পাকসিনিয়া এ্যারাচিডিস (Puccinia arachidis) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তার

ফসলের পরিত্যক্ত অংশে ছত্রাক বেচে থাকতে পারে। বিকল্প পোষক হতে বায়ুর মাধ্যমে এ রোগ সুস্থ গাছে ছড়ায় এবং আর্দ্র্র্র আবহাওয়ায় বিস্তার লাভ করে। বয়স্ক গাছে রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়।

রোগের লক্ষণ

  • এ রোগ গাছের যে কোন অবস্থায় আক্রমণ করতে পারে, তবে বয়স্ক গাছে (৯০-১০০ দিন) রোগের প্রকোপ বেশী।
  • সাধারণত পাতায় নিচের পৃষ্ঠে লাল লোহার মরিচা পড়ার ন্যায় সামান্য স্ফিত ছোট বিন্দুর মত দাগ দেখা যায়।
  • এ দাগ ধীরে ধীরে আকৃতিতে বড় হতে থাকে।
  • অনুকুল আবহাওয়ায় কিছুদিনের মধ্যেই সমস্ত পাতা রাষ্ট বা মরিচায় ছেয়ে যায়।
  • আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে পাতার উপরের পৃষ্ঠেও এ রোগ দেখা যায় এবং ধীরে ধীরে আক্রান্ত পাতাগুলি শুকিয়ে ঝরে পড়ে।
  • আক্রান্ত গাছে বাদামের দানা ছোট ও কুচকানো হয়।
  • মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হলে বাদাম গাছ শুকিয়ে মারা যায়।

rust1

rust2

rust3

rust4

চিত্র: চীনাবাদামের মরিচা রোগের লক্ষণ

রোগের প্রতিকার

  • রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে, যেমন বারি চীনাবাদাম ৬, বারি চীনাবাদাম ৭, বারি চীনাবাদাম ৮, বারি চীনাবাদাম ৯ এবং বারি চীনাবাদাম ১০।
  • জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে।
  • ফসলের পরিত্যক্ত অংশ, আগাছা এবং আবর্জনা পুড়ে ফেলতে হবে।
  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
  • জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করলে রোগের প্রকোপ কম হয়।
  • হেক্সাকোনাজল (যেমন-কনটাফ ৫ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি অথবা প্রোপিকোনাজোল (যেমন-টিল্ট ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।

সূত্র ও লেখকঃ বিজ্ঞানী ড. কে. এম. খালেকুজ্জামান

সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/6/2024



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate