কেন্দ্রীয় বাজেটে শিক্ষাকে কর্মসংস্থানমুখী করে তোলার দিকে জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। যুব সমাজের দক্ষতা বাড়াতে পেশাগত প্রশিক্ষণের কথা বলেছেন। এই প্রসঙ্গে একাধিক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর দেওয়া হিসেব অনুযায়ী আগামী অর্থবর্ষে শিক্ষা ক্ষেত্রে মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৬৮,৯৬৮ কোটি টাকা।
স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রে জেটলির প্রস্তাবগুলির মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক শিশুর বাড়ির ৫ কিলোমিটারের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল। এর জন্য ৮০ হাজার মাধ্যমিক স্কুলকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করতে হবে এবং আরও ৭৫ হাজার স্কুল হয় নতুন করে তৈরি করতে হবে বা জুনিয়র স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করতে হবে বলে জানান তিনি। শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানো ও তার যথাযথ প্রয়োগের উপরেও জোর দেন।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একগুচ্ছ নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি বা বর্তমান প্রতিষ্ঠানগুলিকে উন্নীত করার কথা বলেছেন জেটলি। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিকে। আগামী অর্থবর্ষেই উত্তর পূর্ব ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্যে কোনও না কোনও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তাবিত এইমস ও আইআইএম, দু’টি তালিকাতেই নাম রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের। বিহারেও একটি এইমসের ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়া হবে। এ ছাড়া পঞ্জাব, তামিলনাডু, হিমাচলপ্রদেশ ও অসমেও এইমস গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কর্নাটকে একটি নতুন আইআইটি তৈরির পাশাপাশি ধানবাদের ইন্ডিয়ান স্কুল অফ মাইনসকে আইআইটি-তে উন্নীত করা হবে। নতুন তিনটি ঔষধবিদ্যা চর্চা ও গবেষণার জন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে। বিজ্ঞান ও শিক্ষাতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা কেন্দ্র হবে নাগাল্যান্ড ও ওড়িশায়। হরিয়ানা ও উত্তরাখণ্ডে হবে অ্যাপ্রেন্টিসশিপ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। চলচ্চিত্র প্রযোজনা, অ্যানিমেশন ও গেমিং শিক্ষাকেন্দ্র হবে অরুণাচল প্রদেশে। উদ্যানবিদ্যায় স্নাতকোত্তর গবেষণাকেন্দ্র হবে অমৃতসরে। কেরলের জাতীয় বাচন ও শ্রবণ কেন্দ্রটিকে উন্নীত করে প্রতিবন্ধকতা ও পুনর্বাসন নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হবে।
দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিতে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক একটি আর্থিক সহায়তা সংস্থা গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন জেটলি। স্টুডেন্ট ফিন্যানশিয়াল এইড অথরিটি নামে এই সংস্থাটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পড়ুয়াদের জন্য স্কলারশিপ ও শিক্ষা ঋণের বিষয়টি দেখবে এবং সার্বিক পরিচালনা করবে। প্রধানমন্ত্রী বিদ্যালক্ষ্মী কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা নিশ্চিত করবে, অর্থাভাব যেন উচ্চশিক্ষার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।
যুব সমাজের কর্ম সংস্থানের লক্ষ্যে পেশাগত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য চালু হবে জাতীয় দক্ষতা মিশন ‘স্কিল ইন্ডিয়া’। এ ছাড়া সংখ্যালঘুদের জন্যও এই বাজেটে একটি বিশেষ ঘোষণা রয়েছে। ‘নয়ি মঞ্জিল’ নামে এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যাদের স্কুল পাসের সার্টিফিকেট নেই, তাদের সার্টিফিকেটের বন্দোবস্ত করা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো।
সূত্র: এই সময়, ১ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/12/2020