প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বীকৃতি মিলল সর্বভারতীয় একটি সমীক্ষায়। সারা দেশে পড়ুয়াদের মাতৃভাষা ও ইংরাজিতে দ্রুত পঠন এবং অঙ্ক কষায় প্রবণতা তেমন আশাব্যঞ্জক না হলেও এই রাজ্যে বর্তমানে তা উর্ধ্বগামী। দেশের সব রাজ্য তো বটেই খোদ মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকও এই রিপোর্টকে স্বীকৃতি দিয়ে থাকে।
অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অফ এডুকেশন রিপোর্টের (অসর) ২০১৪ সালের দেশ জুড়ে করা এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিক স্তরে বাংলা ও ইংরাজিতে রিডিং পড়া এবং অঙ্ক কষায় পশ্চিমবঙ্গের পড়ুয়ারা জাতীয় স্তরের তুলনায় অনেকটাই এগিয়েছে। দেশের ৫৭৭টি জেলার ১৬ হাজার ৪৯৭টি গ্রামের ৩ থেকে ১৬ বছরের ৫ লক্ষ ৭০ হাজার পড়ুয়ার ওপর করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে রাজ্যে তৃতীয় শ্রেণির ৫৬.২ শতাংশ ছাত্রছাত্রী মাতৃভাষায় প্রথম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের কিছু অংশ অন্তত পড়তে পারে, জাতীয় স্তরে যে হার মাত্র ৪০.৩ শতাংশ। একই ভাবে ৫৩.১ শতাংশ পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া পাঠ্যবই স্বচ্ছন্দে পড়তে পারে, দেশের হার সেখানে ৪৮.১ শতাংশ। উপরোক্ত দুই ক্ষেত্রে সরকারি স্কুলের গড়েও দেশের তুলনায় রাজ্য অনেক এগিয়ে, প্রথম ক্ষেত্রে যেখানে রাজ্যের হার ৫৩.৭ শতাংশ, সেখানে দেশের গড় ৩১.৮ শতাংশ। এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে রাজ্য এগিয়ে ৫১.৮%-৪২.২% ব্যবধানে।
রিপোর্টে আরও দেখা গিয়েছে, প্রাথমিক স্তরে ইংরাজি পঠনপাঠন ও অঙ্ক কষার ক্ষেত্রেও রাজ্যের পরিসংখ্যান যথেষ্ট আশাপ্রদ। রাজ্যে সরকারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণি ৩৩ শতাংশ পড়ুয়া যখন অন্তত বিয়োগ করতে পারে, সেখানে দেশের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা মাত্র ১৭.৩ শতাংশ। একই ভাবে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া যে ভাগ করতে জানে, তার সংখ্যা রাজ্যে ৩১.৩ শতাংশ অথচ দেশে তা ২০.৭ শতাংশ। পঞ্চম শ্রেণির ক্ষেত্রে অন্তত ইংরাজি পড়তে জানা পড়ুয়া রাজ্যে যেখানে ৫৫.৯ শতাংশ, দেশে তা মাত্র ৩৯.৭ শতাংশ। আবার ইংরাজি বাক্য পড়ার ক্ষেত্রেও রাজ্য এগিয়ে ২২.৬-১৪.৯% ব্যবধানে। এরকম ভাবে আরও একাধিক পরিসংখ্যানে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য পেছনে ফেলে দিয়েছে বাকি দেশকে।
স্কুলের পরিকাঠামো সংক্রান্ত যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রতি ১০০টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ২টি স্কুলে শৌচাগার নেই। যদিও পানীয় জলের সুবিধা নেই ১৩.৯ শতাংশ স্কুলে।
সূত্র : এই সময়, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020