অবশেষে কী পাওয়া গেল সেই বহু প্রতীক্ষিত গ্রহের খোঁজ? নাসা’র সাম্প্রতিক আবিস্কারে অন্তত তেমনটাই মনে করছে তামাম জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহল।

এ যেন বাড়ি খুঁজতে গিয়ে একটা আস্ত মহল্লার খোঁজ পাওয়া। মহাকাশের বুকে আরও একটা পৃথিবীর খোঁজে বহু দিন ধরেই নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল নাসা। এ বার একটা নয়, উপরি পাওনা হিসাবে হাতে এল সাত-সাতটা ‘পৃথিবী’। নাসার দাবি, পৃথিবীর মতোই পরিবেশ এবং আবহাওয়া থাকার প্রবল সম্ভাবনা এই গ্রহগুলিতে। এমনকী জল ও প্রাণ থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না মার্কিন এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। নতুন এই চাঞ্চল্যকর আবিষ্কারে স্বভাবতই নড়েচড়ে বসেছে গোটা বিশ্ব।

সম্প্রতি নতুন আবিষ্কৃত সৌর মণ্ডলের একটি ৩৬০ ডিগ্রি ভিডিও প্রকাশ করেছে নাসা। এই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একটি ছোট নক্ষত্রকে মাঝে রেখে প্রদক্ষিণ করছে সাতটি প্রায় সম আয়তনের গ্রহ। ট্রপিস্ট ১ নামের সেই নক্ষত্রকে ঘিরে পাক খাচ্ছে তারা। যাদের মধ্যে তিনটির তাপমাত্রা ০-১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে।

আর এই কারণেই ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে সেই প্রশ্নটা। তাহলে কি তরল অবস্থায় জল পাওয়া যাবে এই ‘সাত ভাই চম্পা’র গর্ভে? থাকবে কি প্রাণের অঙ্কুর?

নাসা জানাচ্ছে, সম্ভাবনা আছে। আর তা রয়েছে যথেষ্টই। পৃথিবী থেকে মাত্র ৪০ আলোক বর্ষ দূরে হওয়ায় এই সৌরমণ্ডল নিয়ে গবেষণার অবকাশও রয়েছে প্রচুর। ‘ই’, ‘এফ’ এবং ‘জি’ এই তিনটি গ্রহ অবশ্য আবিষ্কার হয়েছিল গত বছর মে মাসেই। তবে বাকি চারটির খোঁজ মিলেছে সম্প্রতি।

জানা গিয়েছে, যে ট্রপিস্ট নক্ষত্রটি ঘিরে সাত গ্রহ ঘুরছে, তার ব্যাস সূর্যের মাত্র ৮ শতাংশ। তবে নাসা’র স্পিত্জার স্পেস দূরবীক্ষণ যন্ত্রে ধরা পড়েছে, পরিবারের কর্তা ট্রপিস্ট নক্ষত্রটির তুলনায় আকারে অনেকটাই বড় পরিবারের অন্য সদস্য গ্রহরা। ট্রপিস্ট নক্ষত্রটির আকার অনেকটা আমাদের বৃহস্পতির কাছাকাছি। সূর্যের থেকে অনেকটা ছোট এবং ২০০ গুণ কম ঔজ্জ্বল্য এই নতুন ‘সূর্য’র।

কেমব্রিজের মহাকাশ বিজ্ঞানী আমাউরি ট্রাইউড জানান, “প্রাণের অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব নয়। আশা করা যাচ্ছে, আগামী দশকের মধ্যেই এর সদুত্তর পাওয়া যাবে।” নাসা জানাচ্ছে, খুব শীঘ্রই ওই গ্রহগুলির রাসায়নিক উপাদান, বিভিন্ন গ্যাসের উপস্থিতি, ভূমির প্রকৃতি, আবহাওয়া, পরিবেশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হবে।

সূত্র: আনন্দবাজার