ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স কলকাতায় অবস্থিত একটি বিজ্ঞান গবেষণা এবং উচ্চ শিক্ষার জাতীয় প্রতিষ্ঠান। বিশুদ্ধ বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৌলিক গবেষণায় সহায়তা করাই এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। ১৮৭৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকার। পদার্থবিজ্ঞানে ভারতের প্রথম নোবেল বিজয়ী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন এই প্রতিষ্ঠানেই তার নোবেল বিজয়ী গবেষণাটি সম্পন্ন করেছিলেন।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারতে বহমান নব জাগরণের জোয়ারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকার এমন একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের চিন্তা করেছিলেন যেখানে নিয়মিত বিজ্ঞান বক্তৃতার আয়োজন করা যায়। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ১৮৭৬ সালের ২৯ জুলাই কলকাতার ২১০ নম্বর বৌবাজার স্ট্রিটে গড়ে তোলা হয় এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠায় মহেন্দ্রলালের পাশাপাশি সক্রিয় অবদান রেখেছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের রেক্টর এবং বিজ্ঞানের অধ্যাপক ফাদার ইউজিন লাফোঁ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাত্র ২০ বছর পর এ ধরনের উদ্যোগ সমগ্র ভারতে বিরল এবং অনন্য ছিল। মহেন্দ্রলাল সরকার তার মৃত্যু অবধি এই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মৃত্যুর পর সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তারই পুত্র ডাঃ অমৃতলাল সরকার।
১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা পদ চালু করা হলে প্রথম অধিকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায়। তার পর পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেছেন চিকিৎসক নীলরতন সরকার, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ এবং সত্যেন্দ্রনাথ বসু। ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও এই প্রতিষ্ঠানের মৌলিক গবেষণা কাজ শুরু হয় ১৯০৭ সালের দিকে। এই বছরই স্বল্প বয়স্ক বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। শিক্ষকতার অবসরে তিনি এখানে নিরলস গবেষণা চালিয়ে যেতেন। এখানে গবেষণা করেই ১৯২৮ সালে তিনি রমন ক্রিয়া আবিষ্কার করেন যা তাঁকে নোবেল পুরস্কার এনে দেয়। আইএসিএস-এ তিনি তৎকালীন প্রথিতযশা বিজ্ঞানীদের সঙ্গে পরিচিত হন যাঁদের মধ্যে ছিলেন মেঘনাদ সাহা, কে এস কৃষ্ণান প্রমুখ।
বর্তমানে আইএসিএস একটি স্বায়ত্তশাসিত বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যার অর্থের জোগান দেয় ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানীদের একটি দল গবেষণার জন্য এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারে। বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নের প্রায় ৮০ জন সদস্য এখানে কর্মরত আছেন।
১৯১৮-এ অ্যামেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি কর্তৃক "ইন্টারন্যাশনাল হিস্টোরিক্যাল কেমিক্যাল ল্যান্ডমার্ক" স্মারকে ভূষিত।
সূত্র : www.iacs.res.in/intro.html
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020