একটা বিপরীত ধারার কথাও আমরা কয়েক জন শিক্ষকের লেখা থেকে পাচ্ছি। যদিও এ সম্পর্কে মতামত জানানো মোট ৬৭ জনের মধ্যে মাত্র ১৫ জনই এই বিপরীত ধারার কথা বলেছেন, কিন্তু সেটাও যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার তা মানতে হবে।
জলপাইগুড়ি জেলার গয়েরকাটা গ্রিল্ড মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ভবতোষ সরকার তাঁর লেখায় উল্লেখ করেছেন যে এলাকার গ্রাম শিক্ষা কমিটির (ভিইসি) সদস্যরা বিদ্যালয়ে আসতেন, খোঁজখবর নিতেন। কোচবিহার জেলার শিক্ষক মধুসূদন অধিকারীও বলেছেন যে ভিইসি-র যে সভা বসে তাতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে অনেক কথা উঠে আসে এবং সেগুলি সমাধানের চেষ্টাও করা হয়।
শিক্ষকদের মুখে এক দিকে যেমন অভিভাবকদের কথা উঠে এসেছে তেমনই এর পাশাপাশি ভিইসি সহ অন্যান্য কমিটির কথাও উঠে এসেছে। সমাজের মানুষদের সাথে শিক্ষকদের একটা সম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্কেরও নানান দিকের কথা উঠে এসেছে। শিক্ষকরা যে অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন তা থেকে দেখা গেছে যে, এমন অনেক শিক্ষক আছেন যাঁরা তাঁদের পূর্বের ভালো অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই বলেছেন গ্রামের মানুষদের সাথে তাঁদের ভালো সম্পর্কের কথা, তাঁদের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের কথা। জলপাইগুড়ি জেলার লেবুবাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্রী অরূপবরণ দত্ত তাঁর কথায় বলেন যে গ্রামের মানুষ তাঁকে শুধু বিশ্বাসই করেন না তাঁকে ভালোওবাসেন। তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু অভিভাবক স্কুলে আসতে শুরু করলেন এবং বলতে শুরু করলেন যে মাস্টার তোর কথা আমার বাচ্চা খুব বলে রে, বাচ্চাকে পড়া, বকা দে, মার ও যেন ভালো করিয়া পড়ার পায়। আমি বলেছিলাম, মারতে বকতে হবে না। আপনারা দেখবেন ও যেন প্রতি দিন বিদ্যালয়ে আসে।’ আরও এক জায়গায় অরূপবাবু লিখেছেন, ‘অভিভাবকরাও এসে বলতে শুরু করলেন, মাস্টার তুই ভালো, তুই কর, আমরা আছি তোর সাথে, তোর কথা আমাদের বাচ্চা খুব বলে। তোকে ভালোবাসে।’
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020