শিক্ষণ পদ্ধতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ইংরাজি শেখানো। আমরা যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওপর কাজ করেছি, তার প্রায় সবগুলিই গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়। স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষার্থীরাও আসে একদমই দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলি থেকে। তাই এ সকল পরিবারের শিশুদের মধ্যে যে ইংরাজির কোনও প্রকার ধারণাই থাকবে না এটিই ধরে নেওয়া যায়। এই সমস্ত শিশুকে ইংরাজি শেখানো সত্যিই শিক্ষকদের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু প্রতিটি বিদ্যালয়েই শিক্ষকেরা প্রতি দিন শিশুদের এই বিদেশি ভাষার ক্লাসটি নিয়ে চলেছেন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভীষণ আশাবাদী ফলও পাচ্ছেন। যেমন, আমরা যে কয়েক জন (৩৬ জন) শিক্ষকের লেখায় ইংরাজি নিয়ে পড়ানোর কথা পেয়েছি তাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ইংরাজি পড়ানো এবং তা নতুন পদ্ধতিতে পড়ানো নিয়ে যারপর নাই আশাবাদী। যেমন বারুইপুরের অভীক কুমার দত্তের লেখা থেকে পড়েছি :
‘ইংরাজি ভাষা শেখানোর ক্ষেত্রে বর্তমানে যে পদ্ধতি চলছে বা যে ধরনের বই আমাদের দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট সাহায্যকারী। ছাত্রছাত্রীদের ইংরাজির প্রতি একটা ভয় সব সময় কাজ করে। আমি প্রথমে ইংরাজি পড়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছিলাম। কিন্তু আমি যখন থেকে তাদের বিভিন্ন জিনিস সামনে রেখে তাদের বাংলা নাম না বলে শুধু ইংরাজি নাম বলতে লাগলাম, ওরা আগ্রহের সাথে সেগুলি গ্রহণ করল। শ্রেণিতে যত বেশি ইংরাজিতে কথা বলতে লাগলাম তারা তত বেশি আগ্রহী হয়ে উঠল। যে বাচ্চাগুলি কখনও বাড়িতে ইংরাজিতে কোনও বাক্য শোনে না এমনকী বাংলা ভাষাও ঠিক উচ্চারণে শোনে না তাদের মুখ থেকে ইংরাজি শুনে সত্যিই খুব গর্ববোধ করি।’
এবং এটি সত্যই শিক্ষকদের বিশাল পরিতৃপ্তির জায়গা যা তাঁদের লেখায় প্রতিফলিত। ছোট ছোট শিশু যখন শিক্ষকদের ‘গুড মর্নিং’ বলে স্বাগত জানায় তখন শিক্ষকেরা সত্যই গর্ববোধ করেন। এ গর্ব হৃদয়ে সম্পদ করে রেখে দেওয়ার মতো।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/18/2020