কিছু শিক্ষক পাঠ্যপুস্তকের প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে বলছেন যে বর্তমান পাঠ্যপুস্তক যথেষ্টই সময়োপযোগী কিন্তু অনেক সময়েই বিকল্প শিক্ষক (প্রাইভেট টিউটর) দ্বারা পাঠ্যপুস্তকগুলি অনেক আগেই চিরাচরিত নিয়মে শিশুরা শেষ করে ফেলছে। তার ফলে যে উদ্দেশ্যে নতুন ভাবে শিক্ষকেরা শিক্ষাদানের জন্য পাঠ্যপু্স্তকগুলি ব্যবহার করবেন বলে ঠিক করেন, তা অধিকাংশ সময়েই পূরণ হয় না। কারও কারও মতে পাঠ্যপুস্তকগুলি যথেষ্ট বিজ্ঞানসম্মত। মুর্শিদাবাদের শ্রাবণী সাহা লিখেছেন, ‘অত্যন্ত সুন্দর ও গভীর ভাবনা চিন্তার ফসল প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যপুস্তকগুলি। বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক অত্যন্ত সমৃদ্ধ এক একটি কর্মপত্র। কিন্তু সেগুলি নিয়ে কাজ করানোর পূর্বেই প্রায় পূরণ হয়ে যাচ্ছে তাদের বিকল্প শিক্ষকের দ্বারা (কিছু ক্ষেত্রে ভুলও)। এই বিকল্প শিক্ষক দ্বারা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে শিশুরা শিক্ষা লাভ করছে।’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা বলছেন :
‘পঠন পাঠনের দিক থেকে আমি দেখেছি আমরা সরকারি যে বইগুলি পড়াই সেগুলির মান খুব ভালো। পাঠ্যবই ঠিকমতো পড়ালে বাইরের কে জি স্কুলে পড়াতে হয় না। শিশুমন খুবই নরম। আমরা যে ভাবে ওদের ছড়া বলে পড়াই ওরা ঠিক সেইমতোই পড়ে। শিশুদের পিছনে একটু বেশি সময় দিলে ওরা আরও ভালো হয়ে উঠতে পারে।’
তবে এর বিপরীত ধারণাও যে নেই তা নয়। বেশ কিছু শিক্ষক বর্তমান পাঠ্যপুস্তকগুলিকে যথেষ্ট যুগোপযোগী নয় বলে মনে করেছেন। গণিতে, ইংরাজিতে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভূগোলের পাঠ্যপুস্তকগুলিতে অনেক পরিমার্জন করা দরকার বলে তাঁরা মনে করছেন। যেমন মুর্শিদাবাদের পার্থসারথি রায় লিখছেন, ‘পাঠ্য বইয়ের বিভিন্ন বিষয়ের গুরুত্ব সব শিশুর ভালো লাগে না।, তখন শিশুটির যে বিষয়টি ভালো লাগে না সেই বিষয়টি পঠনপাঠনের সময় পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায় বা অন্যমনস্ক হয়ে যায়।’ আবার বেশ কিছু শিক্ষক অভিযোগ করেছেন যে পাঠ্যপুস্তকগুলি সময়মতো পাওয়া গেলে বিশেষত নতুন বছরের প্রথম দিনে পুস্তকগুলি শিশুদের হাতে তুলে দিতে পারলে প্রথম দিন থেকেই তাদের বইগুলি পড়াতে সুবিধা হতো। তাঁদের মতে পাঠ্যপুস্তকের অপ্রতুলতার বিষয়টি সরকারের যথেষ্ট মনোযোগ সহকারে দেখা প্রয়োজন।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020