অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

জ্বলছে চার্চ আর মন্দিরের আলো

জ্বলছে চার্চ আর মন্দিরের আলো

বেলা অনেকখানি গড়িয়েছে। বললাম চলো মেলায় যাই। গ্রামের একদম শেষ প্রান্তে পিটুলি, শ্যাওড়া, নাককাটি গাছের ঝ্যালে আচ্ছাদিত ঝ্যালকালির মন্দির। চৈত্র মাসের শেষ শনিবারে এই কালীপুজো উপলক্ষে মেলা বসে। মন্দিরের প্রাঙ্গণ চৈতালী ধানের ক্ষেত। ধানগাছ কেটে নিয়েছে কিন্তু তার অবশিষ্টাংশ পায়ে বিঁধছে সূচের মতো। দোকানপাট বসতে শুরু করেছে। রানিনগরের জিয়াবুল দোকান বাঁধছিল। ওর অন্য সঙ্গী দোকানিরা তখনও আসেনি, তবু ও ওদের কাজ তদারক করছিল। ছেলেদেরকে এই পারস্পরিক বোঝাপড়ার কথা বলেছিলাম। ছেলেরাও কীসের কীসের দোকান বসেছে সেগুলো লিখে নিল। ঠাকুর তখনও থানে বসেনি। বৃদ্ধ দিবাকর দাস ঠাকুর গড়ছেন। ওকে ঘিরে ধরলাম। মেলা আর ঠাকুর সম্পর্কে বলতে বললাম। ছেলেরা Note book বার করল।

বৃদ্ধ বলে চলেছেন : সে তখন অনেক বছর আগের কথা, মা এক দিনেই তৈরি হয়ে পূজিত হয়। সারা রাত্রি ধরে মেলা চলে, ভোর রাত্রে মা দফরপুরের ঘাটে বিসর্জিত হন। একদমে বলাতে বৃদ্ধের হাপরের মতো বুকটা ওঠানামা করে। বৃদ্ধের চোকের কোণ চিকচিক করে ওঠে। এর আগে কেউ যে এমন করে জানতে আসেনি। ওখান থেকে বেরিয়ে আবার মেলাপ্রাঙ্গণে আসি। অন্ধকার নেমে আসছে। মন্দিরটা টুনি বালব দিয়ে সুন্দর করে সাজানো। টিপ টিপ করে জ্বলছে। ছেলেরা আজ গোটা দিনে কী জানল সেগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিচ্ছে। মেলায় পুরোহিতের সঙ্গে দেখা। উনি বললেন, এই কালীর আরও একটা নাম আছে, ছেলেরা বলে উঠলো কী নাম? মিলনকালী, মুখে এক অদ্ভুত তৃপ্তি। বললেন যে বার গ্রামে দুই পার্টিতে ঝামেলা হয়েছিল, তার মিলনাত্মক গ্রাম্য সালিশি বসেছিল মন্দির প্রাঙ্গনে। সেই থেকে মা মিলনকালী নামে পরিচত। পুরোহিত মশাইয়ের কথায় বুঝেছিলাম, ‘ধর্ম’ শব্দটার কী বিপুল সার্থক অর্থ। মেলাঙ্গন থেকে বেরিয়ে আসছি, ছেলেদের দূরে তাকাতে বললাম। বহু দূরে মণিগ্রাম চার্চের আলো দেখা যাচ্ছে, সেই সঙ্গে ঝ্যালকালী মন্দিরের আলোও ঝক ঝক করে জ্বলেছ, ওদের বললাম কোন তফাৎ খুঁজে পাচ্ছিস? সমস্বরে চিৎকার করে বলে উঠল, না স্যার। ওদের চিৎকারেই বুঝে নিলাম। আমার গোটা দিনের সার্থকতা।

সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/17/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate