খেলাধূলার আগ্রহ প্রত্যেক শিশুর মধ্যেই দেখা যায়। ক্লাস শেষে খেলাধূলা করার সুযোগ পেলে বা পি টি করতে পেলে তারা খুব খুশি হয়। আমরা মাসে এক শনিবার শিশুদের নিয়ে সভা করি। তাতে দেখা যায় প্রায় প্রত্যেক শিশুই ছড়া, আবৃত্তি, গান ইত্যাদি বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে চায়। যদিও তারা হয়তো ভালো পারফর্ম করতে পারে না তথাপি তাদের যে মধ্যে এ ব্যাপারে যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারি সেটাই আমাদের খুব ভালো লাগে। আমরা দু’ জন ম্যাডাম ভালো গান না জানলেও ওদের একটু একটু করে শেখাতে চেষ্টা করি।
আমরা ক্লাসের রুটিনে অঙ্কনের ক্লাস রেখেছি। তাতে দেখা যায় বেশির ভাগ শিশুই আঁকতে আগ্রহী এবং বার বার চেষ্টার ফলে কেউ কেউ ভালো ছবিও আঁকে। যেমন — বিড়াল, মাছ, পাখি, গাছ, ইত্যাদি। তা ছাড়া বাড়ি, সূর্য, গ্লাস ইত্যাদি আঁকতে পারে।
মিড ডে মিলের ব্যাপারে দেখি টিফিনের পূর্বের ক্লাসটিতে কিছু শিশু অতিষ্ট হয়ে ওঠে এবং টিফিনের ঘণ্টা পড়লে এত খুশি হয়ে ছোটে যে যেন নিজেদের সামলাতে পারে না। আবার কিছু কিছু ধৈর্যশীল ছেলেও থাকে। তারা ধীরে ধীরে যায়। খেতে বসে তারা এত আনন্দিত হয় যে খেতেও খেতেও তারা পারস্পরিক গল্প করতেই থাকে। তাতে আমরা উপলব্ধি করি যে কেমন পরিবারের শিশুরা আমাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসে।
মাতা কমিটির মিটিং ডাকা হয়। সেই মিটিং –এ আমরা দেখেছি ৯৯ শতাংশ মা-ই নিজেদের নাম সই করতে জানেন না। তাঁরা টিপ সই দেন। তাঁদের আমরা শিক্ষা সম্বন্ধে সচেতন করলেও খুব কম জনই তা বাস্তবায়িত করেন। নিজের সন্তান কেমন পড়াশোনা করছে, এটা শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করার মতো মনোভাব কম মায়েদেরই দেখি। তাঁরা ভাবেন বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করলেই বোধ হয় আমার ছেলেমেয়ে সব কিছু শিখে ফেলবে। তাই কোনও জিজ্ঞাসা তাঁদের মনে খুব কমই জাগে।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/1/2020