বিদেশে পড়াশোনা যে শুধুমাত্র মাস্টারস বা পিএইচডি’র ক্ষেত্রে হয়, তা একেবারেই নয়। ব্যাচেলর ডিগ্রি পাওয়ার জন্য দেশের বাইরে পা-বাড়ানো যেতেই পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দু’টো কারণে ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে ব্যাচেলর ডিগ্রি পাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হন না। (এক) সঠিক তথ্যের অভাব। (দুই) আর্থিক সঙ্গতি। যাঁরা হায়ার সেকেন্ডারি দিয়েছেন, ভাবছেন নিজেদের ব্যাচেলর কোর্সটি একটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়েই করবেন, তাঁরা দ্রুত এ-ব্যাপারে প্রস্তুতি নিন। যে হেতু ছাত্রছাত্রীরা মূলত ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ব্যাপারে বেশি আগ্রহী, এবং নিয়োগ আর উচ্চতর গবেষণার ক্ষেত্রে এই দু’টি মহাদেশের শংসাপত্র বাড়তি গুরুত্ব পায়, আজ আমরা তাই ইউরোপ-আমেরিকার তথ্য নিয়েই আলোচনা করব। আমেরিকা-ইউরোপের ক্ষেত্রে প্রথমেই যেটা দরকার সেটা হল ভাষার বেড়াটা টপকে যাওয়া। বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করলে, কিংবা ফার্স্ট ল্যাঙ্গোয়েজ হিসেবে ইংরেজি থাকলেও, মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পা-রাখার জন্য ‘টেস্ট অফ ইংলিশ অ্যাজ ফরেন ল্যাঙ্গোয়েজ’ বা টয়ফেল উতরে যেতে হবে। এই ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীরা মার্কিন দূতাবাসের শিক্ষা সংক্রান্ত বিভাগ USIEF-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। টয়ফেলের মতোই রয়েছে IELTS বা International English Language Testing System। এই পরীক্ষার জন্য যোগাযোগ করতে হবে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে। ইউ কে-র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, জার্মানি --- এই সমস্ত দেশগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাধারণত IELTS অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
এখনকার এই ‘ইনফরমেশন এজ’-এ কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কী পাঠ্যসূচি রয়েছে, তা জানার জন্য মাথা খোঁড়ার দরকার নেই। এয়ারমেলে চিঠি পাঠানোরও দরকার নেই। বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের বিষয়, পছন্দের দেশ, এই রকম ইনপুট দিয়ে দেখে নিতে পারেন বিশ্বের কোথায় কী কী কোর্স রয়েছে। এই সাইটগুলি একই সঙ্গে জানিয়ে দেয় পাঠ্যক্রমের খরচ কত, স্কলারশিপের সুবিধে আছে কি না। অর্থাৎ গোটা ব্যাপারটাই এখন আপনার হাতের মুঠোয়। ঘর থেকে না বেরিয়েই আপনি করে নিতে পারবেন বিদেশে পড়াশোনার ব্যাপারে যাবতীয় হোমওয়ার্ক। উদাহরণ দেওয়া যাক, ইউরোপের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুলুকসন্ধান মিলবে www.studyportals.eu এই ওয়েবসাইটে। আর যে সব ভারতীয় ছাত্রছাত্রী মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আগ্রহী, তাঁদের জন্য রয়েছে www.usief.org.in। আবার যাঁরা বিশেষ করে জার্মানিতে পড়াশোনা করতে আগ্রহী, তাঁরা দেখতে পারেন www.daad.de/en। তবে মাথায় রাখা দরকার জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য জার্মান ভাষাটা অল্পবিস্তর শিখে রাখলে সুযোগের পরিধিটা অনেক বাড়বে। একই কথা প্রযোজ্য ফ্রান্সের ক্ষেত্রেও। এই ধরনের সব তথ্য কিন্তু নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটগুলি ঘাঁটলে খুব সহজেই জানতে পেরে যাবেন যে কেউ। প্রতিটা ওয়েবসাইটে পাঠ্যসূচি সংক্রান্ত স্কলারশিপের খবরও দেওয়া থাকে। সেটা পেলে ভালো, না হলে বেশির ভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কই এখন বিদেশে পড়ার এডুকেশন লোন দিয়ে থাকে। তাই বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করার বিষয়টা আগে যত কঠিন বলে মনে হত, এখন কিন্তু তার ২০ শতাংশও নয়।
সূত্র ও ছবি : এই সময়, ১৯ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/15/2020