রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত কলেজেই অঙ্ক নিয়ে পড়া যায়। ভালো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। যেমন, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, রামকৃষ্ণ মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ (অটোনমাস) নরেন্দ্রপুর, বেলুড় বিদ্যামন্দির, লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ, বেথুন কলেজ, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।
ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটে উচ্চ মাধ্যমিকের পর বিস্ট্যাট বা বিম্যাথ কোর্স করতে পারে পড়ুয়ারা। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে এই কোর্সে ভর্তি করা হয়। চেন্নাই ম্যাথেমেটিক্যাল ইনস্টিটিউটে যেমন ম্যাথেমেটিক্স অ্যান্ড কম্পিউটার সায়েন্স, ম্যাথেমেটিক্স অ্যান্ড ফিজিক্সে ৩ বছরের ইন্টিগ্রেটেড বিএসসি অনার্স কোর্স পড়ানো হয়। এখানেও ভর্তি হতে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। মূলত দ্বাদশ শ্রেণির অঙ্কের উপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। এরিথমেটিক, অ্যালজেবরা, ট্রিগোনোমেট্রি, জিওমেট্রি ও ক্যালকুলাসের উপর অঙ্ক ছাড়াও অবজেকটিভ প্রশ্ন আসে। স্নাতক স্তরে পাঠরত পড়ুয়ারাও বৃত্তি পায় কোর্স পড়ার সময়। তা ছাড়া জেনারেল স্ট্রিমে অঙ্ক নিয়ে পড়ে পরে গবেষণা করার জন্য পড়ুয়াদের উৎসাহিত করতে ইন্সপায়ার স্কলারশিপ, কিশোর বৈজ্ঞানিক প্রোৎসাহন যোজনার মতো নানান ধরনের স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সরকারি ছাড়াও জগদীশ বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ-এর মতো বেশ কিছু বেসরকারি স্কলারশিপও পাওয়া যায়।
আবার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এ অঙ্কে পাঁচ বছরের ইন্টিগ্রেটেড বিএস-এমএস ডুয়াল ডিগ্রি প্রোগ্রাম রয়েছে। এই মুহূর্তে ভারতে পাঁচটি আইআইএসইআর। এই ডুয়াল ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হতে কেভিপিওয়াই, আইআইটি জয়েন্ট পরীক্ষা দিতে হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্য ও সেন্ট্রাল বোর্ড থেকেও ছেলেমেয়েদের একটা নির্ধারিত নম্বরের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ভর্তির পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হয়। আইআইএসসি বেঙ্গালুরুর স্নাতক কোর্সটির নাম ‘ব্যাচেলর অব সায়েন্স(রিসার্চ) প্রোগ্রাম’। চার বছরের কোর্স। কিশোর বৈজ্ঞানিক প্রোৎসাহন যোজনা (কেভিপিওয়াই), অল ইন্ডিয়া প্রি মেডিক্যাল/প্রি ডেন্টাল টেস্ট(এআইপিএমটি), আইআইটি জয়েন্ট-এর মতো বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে এই কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রথম কয়েকটা সিমেস্টারে পড়ুয়াদের বিভিন্ন কোর বিষয় পড়তে হয়। তার পর পারফরমেন্স অনুযায়ী তারা স্পেশালাইজেশনের বিষয় বেছে নিতে পারে।
আর ন্যাশনাল এন্ট্রান্স স্ক্রিনিং টেস্ট-এ বসতে হয় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, ভুবনেশ্বর এবং ইউনিভার্সিটি অব মুম্বই ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাটমিক এনার্জি সেন্টার ফর এক্সেলেন্স ইন বেসিক সায়েন্সেস-এ ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্সেসের বিষয়টা নিয়ে পাঁচ বছরের ইন্টিগ্রেটেড এম এসসি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য।
আইআইটি রুরকিতে অ্যাপ্লায়েড ম্যাথেমেটিক্সে পাঁচ বছরের ইন্টিগ্রেটেড এমএসসি আছে। আইআইটি কানপুরে চার বছরের ব্যাচেলর অব সায়েন্স ছাড়াও ম্যাথামেটিক্স অ্যান্ড সায়েন্টিফিক কম্পিউটিং-এ ইন্টিগ্রেটেড এম এসসি পড়ানো হয়। আইআইটি গুয়াহাটিতে আবার ম্যাথেমেটিক্স অ্যান্ড কম্পিউটিং-এ চার বছরের বি টেক পড়তে পারে ছেলেমেয়েরা।
সরকারি কলেজ বাদে অধিকাংশ ভালো প্রতিষ্ঠানেই স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাডমিশন টেস্ট দিতে হয়। দ্বাদশ শ্রেণি স্তরে তারা যা পড়েছে, মূলত তার উপরই পরীক্ষা নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষাও নেয় কর্তৃপক্ষ।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, প্রস্তুতি, ১৭ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/29/2020