স্কুলের পঠনপাঠন পদ্ধতির সঙ্গে বাড়ির পঠনপাঠন পদ্ধতির সামঞ্জস্য না থাকলে গণিতে অনীহা, ভীতি আসতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় বাড়িতে একই অঙ্ক একাধিকবার সমাধান করে স্মৃতিতে ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়, স্কুলের পঠনপাঠন পদ্ধতির সঙ্গে যা সামঞ্জস্যহীন। স্কুলে যে দিন যে বিষয়ের ধারণা দেওয়া হয় সে দিনই বাড়িতে সেই বিষয়ের চর্চা না করলে গণিতভীতি আসতে পারে। বিকেলবেলায় মাঠে অনেক সময় দেখা যায় কিছু প্রাণী তাড়াহুড়ো করে লতাপাতা গ্রহণ করছে। রাতে গোয়ালঘরে তারা জাবর কাটে। জাবর কাটে কেন। আসলে তাড়াহুড়ো করে গ্রহণ করা অল্প চিবানো লতাপাতা জাবর কাটলে হজম করতে সুবিধা হয়। ক্লাসরুমে শিক্ষকের দেওয়া ধারণার অনেক বিষয় স্মৃতিতে ধরে রাখতে না পারলে নোট করে নিতে হয়। যে দিন ক্লাসরুমে যে ধারণা পাওয়া যাবে সে রাতেই সেই ধারণার ‘জাবর’ কাটতে হবে। তবেই বিষয় আত্মস্থ হবে।
বড়দের কাছ থেকে ছোটরা অনেক সময় শুনে থাকে অন্য বিষয় থেকে গণিত বিষয়টা কঠিন, রসকষহীন। এ ভাবে গণিতভীতির আগাম বার্তা পৌঁছে যায় ছোটদের কাছে। গল্প, উপন্যাস শিশুসাহিত্যিকরা অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের চরিত্রকে ভয়ংকর, গম্ভীর, রাশভারি রূপ দিয়ে অহেতুক গণিতভীতির ভাইরাস ছড়াচ্ছেন।
ছোটদের গণিতভীতির জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আমরা যারা দায়ী, সেই দায় স্বীকার করে সরকারের অগ্রণী ভূমিকায় যত দ্রুত সম্ভব এই ভীতি দূর করার চেষ্টা করা যায়, ততই তাদের পক্ষে মঙ্গল।
সূত্র : আধুনিক গণিত অন্বেষা, গণিতভীতি সংখ্যা, ২০১২।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/29/2019