ইন্ডিয়ানা জোনস ভক্তদের খুশি হওয়ার মতো খবর। না, তাঁর নতুন কোনও ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। কিন্তু ন্যাশনাল জিওগ্র্যাফিক পত্রিকা সম্প্রতি এমন এক আবিষ্কারের কথা জানিয়েছে যেটি মনে হবে যেন ইন্ডিয়ানা জোনস সিরিজেরই কোনও ছবির দৃশ্য।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা অবশেষে মধ্য আমেরিকার হন্ডুরাস-এর পূর্ব উপকূলে মসকিটিয়া জঙ্গলে বানর দেবতার শ্বেত শহর আবিষ্কার করেছেন। গত ৫০০ বছরে এই অঞ্চলে কেউ প্রবেশই করেনি। অঞ্চলটিকে চিহ্নিতকরণে সহায়তা করেন স্পেশাল এয়ার ফোর্স-এর প্রাক্তন সেনা এবং বৈজ্ঞানিকদের একটি দল।
২০১২ সালে, লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং বা লিডার প্রযুক্তির সাহায্যে ওই এলাকার ধ্বংসাবশেষ প্রথম বার চিহ্নিত হয়। এ বারের অভিযান হয় একেবারে হাতেকলমে, যাতে দু’টি অনুসন্ধানের ফল মেলাতে সুবিধা হয়। এ ভাবেই এসেছে সাফল্য। পত্রিকাটি জানিয়েছে, এই ঘনবর্ষণ বনাঞ্চলটি (রেন ফরেস্ট) এতটাই আদিম, যে সেখানকার জীবজন্তুদের দেখে মনে হয় তারা এর আগে কখনও মানুষ দেখেনি। এদের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় মাকড়সা-বানর, গিনি-মুরগি এবং তাপির। এই প্রসঙ্গে উদ্ভিদবিজ্ঞানী মার্ক প্লটকিন বলেন, ‘এটি হল মধ্য আমেরিকার সব চেয়ে শান্তিপূর্ণ ঘনবর্ষণ বনাঞ্চল। বহু শতাব্দী ধরে অভিযাত্রীরা এই ‘শ্বেত শহর’এর গুন্তধন খুঁজে বেড়িয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ১৫২০ সালে আসা বিখ্যাত অভিযাত্রী, মেক্সিকো বিজেতা এবং অ্যাজটেক সভ্যতার বিনাশকারী হার্নান কোর্টেস।
এর বহু পরে, ১৯৪০ সালে থিওডোর মর্ড নামে এক পর্যটক দাবি করেন, মসকিটিয়ায় তিনি শ্বেত শহরের সন্ধান পেয়েছেন। মার্কিন পত্রিকা ‘দ্য আমেরিকান উইকলি’তে তিনি লেখেন সেখানকার উপজাতিরা বানরদেবের উপাসক। কিন্তু তিনি অঞ্চলটিকে সঠিক ভাবে চিহ্নিত না করেই ১৯৫৪ সালে আত্মহত্যা করেন। ফলে, শ্বেত শহর রহস্যের জট সে বারও খোলেনি।
যে বিশেষজ্ঞ দল এই অঞ্চলটি আবিষ্কার করে, তাদেরই এক জন প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্রিস্টোফার ফিশার বলছেন, “জায়গাটি এমন অকলঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে যে দেখে বিস্মিত হতে হয়। একটি পিরামিডের পাদদেশে পাওয়া গিয়েছে প্রায় ৫০টি পাথরের মূর্তি ও আসবাবপত্র।” অনুমান করা হচ্ছে এগুলি তৈরির সময়কাল ১০০০ থেকে ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ। প্রত্যেকটি উপকরণ নথিভুক্ত করা হলেও এখানে খননকার্য এখনও শুরু হয়নি। সেই কারণেই এই বিরল আবিষ্কৃত স্থলটির প্রকৃত অবস্থান এখনও গোপন রাখা হয়েছে।
সূত্র: এই সময়, ৫ মার্চ, ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/4/2020