আইপডে গান শোনা, ফেসবুক পেজে লেখা, সেল ফোনে মেসেজ পাঠানো, স্কাইপে-তে ভিডিও চ্যাট। এক সঙ্গে নানা কিছু। আজকের কৈশোরের সিগনেচার। এর মধ্যেই চলছে পড়াশোনা। এতগুলো কাজ এক সঙ্গে করলে কোনওটাই কি ঠিকমতো হচ্ছে, প্রশ্ন সকলেরই। যদিও এই প্রজন্ম রকমারি ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে সারাক্ষণ ঘাঁটাঘাটি করতে চোস্ত। এসব দেখে প্রায়ই চমকে যান, পুরনো মানুষজন ও অভিভাবকরা। কেউ বকাবকি করেন, কেউ বা ভাবেন, তাদের সন্তান খুবই দক্ষ। এটা বুঝি অহংকার করারই বিষয়। কিন্তু রাগ বা গর্বের বাইরে গিয়ে বিষয়টাকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার কথা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই। যদি এটা সত্যিই সমস্যা হয়, তাহলে সমাধানের পথটাও থেকে যায় অজানা।
আজকের ছেলেমেয়েরা যে এক সঙ্গে এত কাজ করে, তাতে তাদের মস্তিষ্কের ওপর কী প্রভাব পড়ে? এই নিয়ে এখন নানান গবেষণা চলছে। তা ছাড়া, এত সব গ্যাজেট নিয়ে মাল্টি টাস্ক করা কি সবার পক্ষে সম্ভব ? কেউ এই সব কিছু করেও নিজের পড়াশোনাটা ঠিকমতো করতে পারে, কেউ কেউ মানসিক ভাবে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। সব বন্ধ করে তবেই তাদের মন বসে পড়াশোনায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গিয়েছে, কেউ যদি প্রায়শই এক কাজ থেকে অন্য কাজের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে, তা হলে সেটা তার গভীর ভাবে ভাবনা চিন্তা ও মূল্যায়ন করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। যারা হামেশাই মাল্টি টাস্ক করে, তারা অনেক সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ও অপ্রয়োজনীয় তথ্যের মধ্যে ফারাক করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। কয়েক জন কলেজছাত্রকে নিয়ে এই বিষয়ে একটা গবেষণা চালানো হয়েছিল। নানান কাজ নিয়ে মাল্টি টাস্ক করতে দেওয়া হয় তাদের। শেষে দেখা যায়, পরের কাজটা করতে গিয়ে তারা আগের কাজের খেই হারিয়ে ফেলছে। নতুন করে কাজটা করতে তাদের যেমন অসুবিধা হচ্ছে, তেমনই তাদের কাজে মন দিতেও অসুবিধা হচ্ছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, প্রস্তুতি, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/18/2020