ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের প্রতি আসক্তি যে একমাত্র অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদেরই রয়েছে এটা বলা ঠিক হবে না। অভিভাবকেরাও এই সমস্ত গ্যাজেট ভীষণ পছন্দ করেন। তাঁরা এগুলি কেনেন এবং ছেলেমেয়েরা সেগুলো অবাধে ব্যবহার করে। অভিভাবকেরাই যদি সারাক্ষণ নানা গ্যাজেট নিয়ে মত্ত থাকেন, তা হলে ছেলেমেয়েদের কী ভাবে বাধা দেবেন। এই সব গ্যাজেট ব্যবহারের বিষয়ে অধিকাংশ ছেলেমেয়ের ওপরেই খুব একটা নজরদারি করা হয় না। সার্ভে করে দেখা গিয়েছে, নেট-এ কোন সাইট দেখা উচিত, কোনটা নয়, বা কতক্ষণ মোবাইল, ফেসবুক বা প্লে স্টেশন নিয়ে সময় কাটাবে, সেই সব নিয়ে অধিকাংশ বাড়িতেই কোনও নিয়ম রাখেননি অভিভাবকরা। যাদের ওপর নজরদারি করা হয়, তাদের অনেকের মতে অভিভাবকরা সব চেয়ে বেশি নজর রাখেন কম্পিউটার ব্যবহারের ওপর। যদিও ছেলেমেয়েরা কোন সাইট দেখছে বা কতক্ষণ তাতে কাটাচ্ছে, সেই বিষয়ে তাঁরা খুব একটা খেয়াল রাখেন না। অনেকের ঘরে কেব্ল সংযোগ সহ টিভিও থাকে।
সেলফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক গ্যাজেট আমাদের জীবনটাকে যে সহজ করে দিয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু অল্পবয়সিদের কাছে সেটা মূল বিষয় নয়। চব্বিশ ঘণ্টা এর মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারার কারণেই এই সব গ্যাজেটের প্রতি ওদের এত আগ্রহ। স্কুল-কলেজ তো বটেই, বাড়িতেও তাদের অনেকখানি সময় কেটে যায় বন্ধুদের সঙ্গে হোয়াট্সঅ্যাপ, ফেসবুকে। এই অভ্যাস তাদের মধ্যে এতটাই প্রকট হয়ে উঠছে যে বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত,এমন সময় আসবে যখন এরা মুখোমুখি আলাপচারিতার ক্ষমতাটাই হারিয়ে ফেলবে।
এসব ছাড়াও নজরদারি রাখার অন্য কারণও আছে। নেটের বিস্তার অসীম। সোশাল নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রেও কথাটা একই রকম ভাবে সত্যি। তাই যে সমস্ত তথ্য বা উপাদানের সঙ্গে এই মাধ্যমগুলির মধ্য দিয়ে কিশোর মনের যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে, সেগুলি তাদের মনে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে, সেগুলি তাদের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলতে পারে কি না, নজরদারি না রাখলে, সেগুলি বোঝা প্রায় অসম্ভব।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, প্রস্তুতি, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/27/2020
এই নীতি-নির্দেশিকার মূল উদ্দেশ্য হল কোভিড-১৯এর সংক...