অসংখ্য মানুষের কাছে এই রোগ হচ্ছে পাপের ফল। মানুষ মায়ের গর্ভের সন্তান অপারেশনের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ করছে। এক জনের দেহ থেকে কিডনি অন্য জনের দেহে স্থাপন করে মৃত্যুপথযাত্রীকে জীবন দিচ্ছে। অথচ সেই অভিশপ্ত রোগ বলে প্রচার পাওয়া নিরীহ রোগ কুষ্ঠের কুসংস্কার কাটছে না কিছুতেই। কুষ্ঠের চিকিৎসা আছে, কুষ্ঠ ভালো হয়; তার পরও পৃথিবী জুড়ে কুষ্ঠ রোগীরা বড়ই অস্পৃশ্য।
মাইকোব্যাকটেরিয়াল লেপ্রি নামের একটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এই রোগ হয়। কুষ্ঠ রোগ মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের বাইরের দিকের স্নায়ু, ত্বক, অণ্ডকোষ এবং নাকের মিউকাস মেমব্রেনের ক্ষতি করে। আক্রান্ত ব্যক্তির নাক-মুখের সর্দির মাধ্যমে এই রোগ সাধারণত অন্য সুস্থ মানুষে ছড়ায়। তবে বেশির ভাগ মানুষেরই কুষ্ঠ প্রতিরোধক ক্ষমতা দেহে থাকায় সাধারণত তা আক্রমণ করতে পারে না।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ করলে এই রোগ ছড়ায় না। এই রোগের উপসর্গগুলো হচ্ছে - চামড়ায় সাদা সাদা দাগের মতো দেখা দেয়। দেহের যে সব স্থানে এমন সংক্রমণ দেখা দেয়, সেখানে পিণ্ডাকার হয়ে ফুলে যায়। এই রোগের ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি একেবারেই কম। তাই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার দু-তিন বছর পর আস্তে আস্তে তা প্রকাশ পেতে থাকে। সরকারি বহু প্রতিষ্ঠানেই বিনা মূল্যে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা হয়। তাই কুষ্ঠ দেখে রুষ্ট হওয়ার কোনওই কারণ নেই। কুষ্ঠ হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে হবে, কারণ কুষ্ঠের দরুন অন্ধত্ব, বন্ধ্যাত্বসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে, কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, পায়ের নীচে ক্ষত হতে পারে, নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে পারে। তাই যে রোগ ভালো হয়, তা-ও আবার বিনা পয়সায়, তাকে নিয়ে কেন বসে থাকবে? কুষ্ঠ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সারা বিশ্বে ৩০ জানুয়ারি কুষ্ঠ দিবস পালিত হয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াণ দিবস। কুষ্ঠ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার ডাক প্রথম দিয়েছিলেন গান্ধীজি। কুষ্ঠরোগীকে যে সমাজ অবাঞ্ছিত, উপেক্ষিত, অবহেলিত করে রাখতে পারে না, তা প্রথম শিখিয়েছিলেন মহাত্মা।
সূত্র: kalerkantho.com
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020
গান্ধীজির মৃত্যু দিনটিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করা...