এ বার যাওয়া যাক সারান্ডায়। সাতশো পাহাড়ের দেশ থেকেই সারান্ডা শব্দের উৎপত্তি। তারই অংশ কিরিবুরু। হো ভাষায় মেঘাতুবুরু কথার অর্থ জমাট বাঁধা মেঘেদের মতো জমাটি বুরু অর্থাৎ জঙ্গল। তেমনই ছিল কিরিদের বুরু অর্থাৎ পোকাদের জঙ্গল কিরিবুরুতে। যমজ দুই গঞ্জ শহরের অবস্থান পাশাপাশি একই শৈলশিখরে সারান্ডার জঙ্গলে। মেঘাতুবুরুতে বোকারো স্টিল আর কিরিবুরুতে কিরিবুরু আয়রন ওর কোম্পানির কারখানায় পাথর গুঁড়িয়ে লোহা মেলে। সেই লোহা যাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন ইস্পাত প্রকল্পে।
থরে থরে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে পাহাড় আর গহন অরণ্য কিরিবুরুতে। গরমের আধিক্য নেই, শীতের প্রকোপও কম। তবে খনে খনে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয় কিরিবুরুতে । মেঘের ঘনঘটাও যথেষ্ট। নিরালায় নিভৃতে ছোট্ট অবকাশ যাপনের মনোহর পরিবেশ রয়েছে এখানে। অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা আর অফুরন্ত বনজ সম্পদের জন্য কিরিবুরু অনবদ্য।
কিরিবুরুর ভিউ পয়েন্ট থেকে জলে ভাসা মরালের মতো ৭০০ পাহাড় চূড়া গুনে নেওয়া যায় একে একে। দেখে যেন মনে হয় সামুদ্রিক ঢেউ-এর মতো পাহাড়ি টাইফুন আছড়ে পড়বে যে কোনও মুহূর্তে। ৫ কিমি দূরে হিল টপ বা খনি এলাকা। হিল টপে ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো সারান্ডা দেখে নেওয়া যায়। আবার কিরিবুরু থেকে ঘণ্টা চারেকের জিপ যাত্রায় দেখে নেওয়া যায় থলকোবাদ, শশাংবুরু ও অনাঘ্রাতা কুমডি অরণ্য। হাজার দুয়েক ফুট উঁচুতে চলতে ফিরতে বন্য হাতি, বন্য শুকর, শম্বর, ভল্লুক, বাইসন, চিতা ছাড়াও নানা রকমের বনচরদের দর্শন মেলে থলকোবাদ ও কুমডিতে। এ ছাড়া ভিউ পয়েন্ট থেকে ৫ কিমি দূরে টোয়েবু ফল্স।
অভিযানপ্রিয় যাঁরা, তাঁরা থলকোবাদ থেকে আরণ্যক পথে ৪০ কিমি জিপ যাত্রায় পৌঁছে যেতে পারেন সিমলিপাল। ভার্জিন অরণ্যের মায়াবি রূপ আর জন্তু দর্শনে রোমাঞ্চ মিললেও সারান্ডায় পদে পদে পথ ভুলের সম্ভাবনা। পথেই পাবে কোয়েনা নদী। অদূরে রয়েছে বাঁধ। এ ছাড়া দেখার জন্য রয়েছে ঠাকুরানি গিরিশ্রেণি। রঙবেরঙের ফুল,পাখি, বন্যজন্তুর কিরিবুরুর আকর্ষণ ঠেকানো প্রায় অসম্ভব।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/28/2020