আদিবাসী অধ্যুষিত এক অখ্যাত গ্রাম, নাম তার সাকোহি। ১৯০৮ সালে ভারতের প্রথম ইস্পাত কারখানা টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয় এই সাকোহিতে। আজ বিশ্বের প্রথম সারির ইস্পাত কারখানাগুলির মধ্যে টিসকো অন্যতম। টিসকোর প্রতিষ্ঠাতা জামসেদজি টাটার নামে গড়ে উঠেছে জামসেদপুর বা টাটানগর। ছবির মতো পটে আঁকা সুন্দর শহর।
দলমা পাহাড়, ডিমনা লেক, সুবর্ণরেখা ও খড়কাই নদীতে ঘেরা জামসেদপুরের মূল আকর্ষণ মহিশূরের বৃন্দাবন গার্ডেনের ধাঁচে ধাপে ধাপে গড়ে ওঠা ২২৫ একর ব্যাপ্ত জুবিলি পার্ক। পার্কে রয়েছে চিলড্রেনস পার্ক, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, গোলাপ বাগিচা, ওপেন এয়ার জু। জুবিলির পাশেই টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও কিনান স্টেডিয়াম। শহর থেকে ১১ কিমি দূরে দলমা পাহাড়ের কোলে ডিমনা লেকটিও টাটার আরেক দ্রষ্টব্য। রয়েছে বোটিং-এর ব্যবস্থাও। সাকচি থেকে ১০ কিমি দূরে শালে ছাওয়া দোমোহনিতে মিলন ঘটেছে সুবর্ণরেখা ও খড়কাই নদীর। এখান থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য মনে রাখার মতো। চড়ুইভফাতির মনোরম পরিবেশ।
টাটা থেকে ৪৩ কিমি দূরে দলমা। পশ্চিমবাংলার লাগোয়া ৩০৬০ ফুট উঁচু দলমা পাহাড়। এক দিকে কাটাসনি, অন্য দিকে চন্দ্র, দুই পাহাড়। মহুয়া, পলাশ, কুসুম, শিমুল, কুর্চি, বনচামেলি, করঞ্জ ফুলে-ফলে ভরা ১৯৩ বর্গ কিমি অরণ্য সারা বছর অসূর্যম্পশ্যা। পাহাড়ি গুহায় শিবমন্দির, টিলায় হনুমানজির মন্দির। নিবিড় অরণ্য আদিবাসী, বন্য হাতি, ভল্লুক সহ নানা বনচরের সহাবস্থান, আরণ্যক শোভা মোহময় করে। গহীন বনের মাঝে বড়কাবাঁধ, মেজকাবাঁধ, ছোটকাবাঁধ, সল্টলিক, বিজলিঘাঁটি রয়েছে দলমায়। বনচরেরা আসে জল খেতে। গরমে অযোধ্যা পাহাড় থেকে বুনো হাতিও আসে দলমায়। আসে পাখিরাও। পাহাড়ি পথে বসে রক ক্লাইম্বিং-এর আসর। দলমায় রয়েছে নেচার ইন্টাপ্রিটেশন সেন্টার, ডিয়ার ব্রিডিং সেন্টার। উৎসাহ থাকলে জামসেদপুর থেকে ৩৯ কিমি পশ্চিমে সেরাইকেলায় চৈত্র সংক্রান্তিতে ছৌ নাচের উৎসবও দেখে নিতে পারেন।
যতই অরণ্যে বিহার করুন, টাটানগরকে কেন্দ্র করে চারপাশটা না দেখে নিলে আপনার ঝাড়খণ্ড ভ্রমণ অসম্পূর্ণ।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/29/2020