ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনা জেলার দেবগৃহ অর্থাৎ দেবতার ঘর আজ হয়েছে দেওঘর। বৈদ্যনাথ ধাম নামেও সমধিক খ্যাত। রেল স্টেশনও বৈদ্যনাথ ধাম। দেব লিঙ্গের শিরের পাঁচ আঙুলের ছাপে জড়িয়ে রয়েছে পুরাণ কাহিনি। ৭২ ফুট উঁচু মন্দিরে দেবতা কামনা লিঙ্গ এখানে বৈদ্যনাথ নামে খ্যাত। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম বৈদ্যনাথ বা লর্ড শিবের মন্দিরটি এক গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু তীর্থ। ১৫৯৬ সালে এই মন্দির গড়েন রাজা পূরণমল। চকবন্দি, গোলাকার মন্দিরে পুষ্পমাল্যে ভূষিতদেবতার স্বরূপ দর্শন মেলে সন্ধ্যায় স্নান অভিষেক কালে। বিপরীতে ৯ অনাদি শিব ছাড়াও নানান দেবদেবী আছেন মন্দিরে। তেমনই আছে মন্দিরের উত্তরে ১৫০ সিঁড়ির ক্ষীরগঙ্গা দিঘি। ৬ কিমি দূরে গঙ্গা। ৫১ পীঠের এক পীঠ এই বৈদ্যনাথ ধাম, বিশ্বাস অনুযায়ী সতীর হৃদয় পড়েছিল এখানে।
সারা ভারত থেকে তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে দেওঘরে আসেন পর্যটক, স্বাস্থ্যান্বেষীরা। স্টেশন রোড থেকে একটু দূরেই ক্লক টাওয়ার। দেওঘরের প্রাণকেন্দ্র ক্লক টাওয়ারকে ঘিরে জমে উঠেছে বাজারহাট। ক্লক টাওয়ার থেকে ১২ কিমি দূরে শহরের উপকণ্ঠে তপোবন। এ ছাড়া রয়েছে নওলাক্ষি মন্দির, বীর হনুমানের মূর্তি, কুণ্ডেশ্বরী নবগ্রহ মন্দির। তপোবনের ছোট্ট ভজন গুহায় বালানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেন বলে কথিত। জনশ্রুতি এখানে বাল্মিকী এসেছে, কুণ্ডে স্নান করেছেন সীতাও। দেওঘরে রয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমও। যে কোনও দিন সকালে দেওঘর থেকে ২০ কিমি দূরে ত্রিকূট পাহাড় থকেও ঘুরে আসা যায়। পাহাড় চড়ার রোমাঞ্চ যেমন আছে, তেমনই পাহাড় চূড়ায় রয়েছে রোপওয়ে। গিরিশৃঙ্খল আর অরণ্যের যুগলবন্দি বারবার টানে পর্যটকদের। নানান জীবদন্তুরও দেখা মেলে। মন্দিরের পাশাপাশি নৈসর্গিক দৃশ্যের আবেদনও অসামান্য। পাশাপাশি ক্লক টাওয়ার থেকে ৪ কিমি দূরে অনুচ্চ নন্দন পাহাড়ও দেখে নেওয়া যায়। নন্দনের শিরে রয়েছে চিত্ত বিনোদনের জন্য মনোরঞ্জন পার্ক। এ ছাড়াও রয়েছে ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের আশ্রম সৎসঙ্গ নগর। ভক্তেরা আসেন দিনভর। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই আশ্রমের মূল কেন্দ্রও দেওঘরে।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020