ছোটনাগপুর পাহাড়ের ঢালে পলামু জেলায় ১২৫০ মিটার উঁচুতে শাল-মহুয়া-পলাশে ছাওয়া পাইন আর ইউক্যালিপটাসের শহর নেতারহাট। মেঘমেদুর প্রকতির মাদকতা আছে। তাই নেচারহাট-ও লোকে বলে থাকে নেতারহাটকে। নেতা অর্থ বাঁশ, অর্থাৎ বাঁশের ঝাড় ছিল অতীতে, সেই থেকে নাম। শান্ত-স্নিগ্ধ পাহাড়ি শহর। প্রকৃতিতে আছে বৈচিত্র্য। আর পাঁচটা পাহাড়ি শহরের মতো কোলাহল নেই। না আছে দোকানপাট, না আছে জনতার ভিড়। ছোট্ট অবকাশ যাপনের মনোরম পরিবেশ। সাহেবি কথায় নেতারহাট হল কুইন অফ ছোটনাগপুর। ১০ কিমি দূরের ম্যাগনোলিয়া পয়েন্ট থেকে সূর্যাস্ত আর আর টুরিস্ট বাংলো প্রভাত বিহার থেকে সূর্যোদয় নয়নাভিরাম। পঞ্চপাণ্ডব পাহাড়ের শিরে সূর্যের উদয় ও অস্ত নেতারহাটের মূল আকর্ষণ। ম্যাগনোলিয়া পয়েন্টের পথে ২ কিমি যেতে কোয়েল ভিউ পয়েন্ট থেকে কোয়েল নদীর সুন্দর দৃশ্যও পায়ে পায়ে দেখে নেওয়া যায়। আর আছে লেক, আরণ্যক শোভা সারা নেতারহাটে। গ্রীষ্মের শীতলতা, বর্ষার জলভরা মেঘের ঘনঘটা, এমনকী শীতের দিনগুলিও বৈচিত্র্যে ভরা নেতারহাটে। শীতে সর্বনিম্ন ১ ডিগ্রি আর গ্রীষ্মে ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত ওঠানামা করে তাপমাত্রা। উৎসাহীরা দেখে নিতে পারেন অঞ্জলি মাতার গুহা মন্দির। ৬ কিমি দূরে আপার ঘাঘরি জলপ্রপাত, আরও ৩ কিমি দূরে লোয়ার ঘাঘরি, ৩৫ কিমি দূরে সর্পিলাকার সিধনি জলপ্রপাত, ৬১ কিমি দূরে ৪৬৮ ফুট উঁচু থেকে নামছে লোধ জলপ্রপাত। এক রাত মহুয়াডারে কাটিয়ে দেখে নেওয়া যায় সবুজ লাবণ্যময় পাহাড়ে ঝাড়খণ্ডের উচ্চতম লোধ, সিধনি ও সুগা বাঁধ। স্থানীয় ভাষায় সুখা তথা সুগ্গা অর্থ টিয়া পাখি। টিয়ায় ভরা পাহাড়ে নামছে সুগা ফল্, পুষ্ট হচ্ছে কোয়েল নদী।
বেতলা থেকে বাসে ৭২ কিমি দূরের মহুয়াডার গিয়ে আবার নতুন করে বাসে চেপে ৪৩ কিমি দূরের নেতারহাট পৌঁছন। সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ। তবে সংযোগকারী বাসের অভাবে এক রাত থাকাও যেতে পারে মহুয়াডারে। ডালটনগঞ্জ-নেতারহাট বাসও যায় বেতলা হয়ে। তবে বেতলা থেকে সিট পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। পাহাড়, অরণ্য, ঘরনা, নদী- সারা পথের শোভা মধুময় করে তোলে।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/6/2020