ই টি ম্যাকলাসকি সাহেবের নামানুসারে রাঁচি জেলায় ১৯৩৪ সালে দশ হাজার হেক্টর তথা লাপড়া, কঙ্কা, হেসাল এই ৩ বস্তি লিজে নিয়ে বিলেতের আদলে গড়া মিনি হোমল্যান্ড ম্যাকলাসকিগঞ্জ। শাল, সেগুন, মহুয়ার জঙ্গল -- আরণ্যক ম্যাকলাসকিগঞ্জ। ক্ষয়িষ্ণু অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সংস্কৃতির সঙ্গে আদিবাসী জীবনের সহজ সরল গতিময় ছন্দ। লাল কাঁকড়ের পথঘাট, ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাংলোধর্মী ভিলা, কটেজ। নীরবে-নিভৃতে অরণ্য প্রেমিকদের ছোট্ট অবকাশ যাপনের আদর্শ জায়গা ম্যাকলাসকিগঞ্জ। স্থানীয়রা ম্যাকলাসকি বলে ডাকে একে। এখানে মূলত ওঁরাও আদিবাসীদের বাস। জল-হাওয়া তুলনাহীন। এমনকী এপ্রিল মাসেও শীতের আমেজ মেলে বাতাসে। ভরা বর্ষায় মালভূমির রুক্ষতা ও শ্যামলিমা, বসন্তে শিমুল-মাদার-পলাশ-কৃষ্ণচূড়ার লালের সাথে জ্যাকারান্ডার বেগুনি হাসি ও অমলতাসের হলুদ-সোনালি মুড়ে দেয় ম্যাকলাসকিগঞ্জকে। সোনালি আলোয় সূর্য ওঠে, অস্ত যায় নাকতা পাহাড়ের নীচে --- দুই-ই অপূর্ব। সকাল সাঁঝে পাখপাখালির আগমনী যেমন আছে, তেমনই আছে বাতাসের গুনগুনানি, নীলাকাশের চাঁদোয়া হয়ে ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা মেঘ। কুহকী অরণ্যের মায়াবী জাদু তো আছেই। এ সবের মাঝে রেল লাইন ধরে পশ্চিমে বয়ে চলে ছোট্ট নদী চাট্টি। আর আছে আদিবাসী হস্তশিল্প সমবায় জাগৃতি বিহার, জার্মান ফ্যামিলি চালিত ফার্ম, ছোট্ট হলেও কঙ্কার চার্চটিও দেখে নেওয়া উচিত হবে ম্যাকলাসকিতে।
রাঁচি-কুরু-নেতারহাট পথে রাচি থেকে ৩০ কিমি গেলে মান্ডার। আর মান্ডার থেকে ২ কিমি দূরের বিজুপাড়া মোড় থেকে ডানহাতি ২৮ কিমি গিয়ে ম্যাকলাসকিগঞ্জ। বাস যাচ্ছে। বেতলা থেকেও পথ এসেছে কেঁড়, ছিপাদোহর,লাতেহার,চান্দোয়া, কুরু, বিজুপাড়া হয়ে। ডাঐলটনগঞ্জ থেকে নানান ট্রেন। দূরত্ব ১২২ কিমি।ঘণ্টা তিনেকের পথ। তবে, কলকাতা থেকে সরাসরি যাত্রায় দুপুরের শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেসে চেপে পরদিন রাতে পৌঁছনোটাই সুবিধাজনক। তেমনই প্রতি সোমবার দুপুরে হাওড়া-ভূপাল এক্সপ্রেসে বরকাকানা পৌঁছে, সেখান থেকে পোগলসরাই, গোমো-চাপান, গোমো-বারওয়াদি, বরকাকানা-রাজেন্দ্রনগর পালামৌ এক্সপ্রেসে ঘণ্টা দেড়েকে ম্যাকলাসকিগঞ্জ পৌঁছে যাওয়া যায়। আসানসোল থেকেও রয়েছে ম্যাকলাসকিগঞ্জ যাওয়ার ট্রেন।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/16/2019