রেল স্টেশন থেকে বেরোতেই ডাইনে বাঁয়ে স্টেশন রোডে অতীতকালে গড়ে উঠেছিল স্বাস্থ্য গড়ার আনন্দ নিকেতন। টিলা টিলা শিমুলতলায় ভিলা ভিলা বাড়ি। বাঁযে সে কালের হাউজ অফ লর্ডস আর ডাইনে হাউজ অফ কমন্স। চার পাশ ঘিরে দিকচক্রবাল রেখা ঢেকে প্রহরী হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাহাড়শ্রেণি। খুবই শান্ত, স্নিগ্ধ, নির্জন পরিবেশে স্বাস্থ্যকর স্থান শিমুলতলা। নিসর্গের রূপকথা, মনোরম প্রকৃতি, জলবায়ূ স্বাস্থ্যপ্রদ। তাই শহর থেকে দূরে প্রকৃতির ডাকে ছুটে যান স্বাস্থ্যান্বেষীরা। অবকাশ যাপনের মনোরম জায়গা অধুনা মুঙ্গের জেলার এই শিমুলতলা। শিমুলতলা বিহারে হলেও ‘বাঙালির পশ্চিম’ থেকে একে বাদ দেওয়া যায় না।
পাহাড়, টিলা, শাল, মহুয়ার অরণ্যে প্রাকৃতজনের গ্রাম দেখতে দেখতে হারিয়ে যান ভোরের শিশির ভেজা লাল মোরামের পথে পথে। পাহাড়ি ম্যালের মতো শিমুলতলার এই রেল স্টেশন। রেল স্টেশনের মুখোমুখি দেড় কিমি দূরে শিমুলতলার মূল আকর্ষণ লাট্টু পাহাড়। দুর্গাকার পাটনা লজ, নলডাঙার রাজবাড়ি, সেন সাহেবদের লন টেনিস কোর্টকে নিশানা করে মাঠ পেরিয়ে পায়ে পায়ে অভিযান করে ফেরা যায় ১০০০ ফুট উঁচু লাট্টু পাহাড়। গাছগাছালিতে ছাওয়া লাট্টুর শিরে চড়ে দেখে নেওয়া যায় আদিবাসীদের দেবতাদের থান। সূর্যাস্তও মনোরম লাট্টু পাহাড়ে। সত্যজিত রায়ের ‘মহাপুরুষ’ সিনেমার সূর্য ডোবার দৃশ্য দেখতেও যেতে হবে শিমুলতলায়।
উৎসাহীরা রেল লাইন পেরিয়ে ৬ কিমি দূরে পাহাড় ও অরণ্যের সহ-অবস্থানে মনোরম পরিবেশে হলদি ফল্স দেখে আসতে পারেন। রেল স্টেশনের কাছে ২ কিমি দূরে দুর্দম বেগে বয়ে চলেছে লীলাবরণ ফল্স বা পাহাড়ি ঝোরা। চলার পথে সিকেটিয়া আশ্রম, ধীরহারা ফল্সও দেখে নিতে পারেন। ফল্স পরিক্রমায় অরণ্যচরদের দেখা মেলাও অসম্ভব কিছু নয়।
কলকাতা থেকে নানান ট্রেন যায় ৩৪৩ কিমি দূরের শিমুলতলায় । সবই মেন লাইনে। অন্যদিক থেকে এলে মজফ্ফরপুর থেকে কলকাতাগামী ট্রেনে এসে শিমুলতলায় নামা যেতে পারে।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/22/2020