দার্জিলিং জেলার পরতে পরতে পর্যটকদের আকর্ষণ। যেদিকেই যাওয়া যায়, প্রকৃতি যেন মানুষের জন্য দুহাত উপুড় করে দিয়েছে। এই জেলার কালিম্পং মহকুমায় এই জাতীয় উদ্যানটি। এই বনাঞ্চল জাতীয় উদ্যানের শিরোপা পায় ১৯৮৬ সালে। ৮৮ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এই অরণ্য ছড়িয়ে আছে। জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে উত্তরপূর্ব ভারতের সব চেয়ে সমৃদ্ধ অরণ্যভূমি এই নেওড়া ভ্যালি।
এই বনাঞ্চলের অনেকটাই আজও দুর্গম। সেই দুর্গমতার কারণেই প্রাণীকূল এবং উদ্ভিদকূল এই অরণ্যে এখনও নিরাপদ। রাজকীয় রেড পান্ডার বাস এই জঙ্গল। এত ঘন সন্নিবদ্ধ আকাশছোঁয়া গাছের ঠাসবুনোট জঙ্গল এই নেওড়া ভ্যালি যে দিনের বেলায় বহু জায়গায় সূর্যের আলো পৌঁছয় না। জঙ্গল পথে হাঁটা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু সূর্যালোকের অভাবে মেঠো পথ স্যাঁতসেঁতে, অনেক জায়গায় পিচ্ছিল। চোরাশিকারিদের কোপ পড়ে না এখানে। টুরিস্টরাও খুব একটা মাড়ান না এর পথ। তাই প্রকৃতিপ্রেমিক, ট্রেকারদের স্বর্গরাজ্য। মাঝেই মাঝেই বাঁশের জঙ্গল পথ রোধ করে নুয়ে পড়ে, রঙিন রডোডেনড্রন মাথার উপর তৈরি করে চাঁদোয়া, অচেনা অর্কিড অবাক করে, দূরের সবুজ উপত্যকা হাতছানি দেয়, পাহাড়ি স্রোতস্বিনী পথ চলার সঙ্গী হয়, উচ্ছল ঝর্না ঝাঁপিয়ে পড়ে পথের মাঝে, মাঝেই মাঝেই দিগন্তে উঁকি দেয় তুষারধবল শৃঙ্গ, ওক-ফার্ন-শালের ঘন বনানীর মধ্য দিয়ে বয়ে যায় শন শন হাওয়া, গাছের ডালে বসে থাকে রেড পান্ডা, ছুটে বনের মধ্যে লুকিয়ে পড়ে ক্লাউডেড লেপার্ড, নাম-না-জানা কত পাখি অবিরাম সুমধুর ধ্বনি সৃষ্টি করে পথ চলার পরিশ্রম লাঘব করে --- এই ভাবেই হয়তো পৌঁছে যাওয়া যায় ১০৬০০ ফুট উচ্চতায় রচেলা দাঁড়ায় --- নেওড়া ভ্যালির শীর্ষতম বিন্দুতে। নেওড়া ভ্যালির বনপথে ট্রেকিং এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
লাভা নিকটতম শহর যেখান থেকে শুরু করা যেতে পারে নেওড়া ভ্যালি ট্রেকিং। তোমরা, ছোটরা কিছুটা হেঁটে নেওড়া ভ্যালির স্বাদ নিতে পারো। সারা জীবন মনে থাকবে।
সূত্র: পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/29/2020