কালী কলকাত্তাওয়ালী কিংবা কালীক্ষেত্র কলকাতা। কলকাতার নামের সঙ্গে কী ভাবে জড়িয়ে গেছে কালীঘাটের নাম। কলকাতার নাম কী ভাবে এসেছে তা নিয়ে নানা কাহিনি। অনেকেই মনে করেন কলকাতা নাম কালীঘাট থেকেই এসেছে। এর কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। তবু কলকাতা, বাঙালি আর মা কালী যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তাই কলকাতা বেড়াতে এসে ধর্মপ্রাণ মানুষ কালীঘাটে মা কালীকে দর্শনে আসবেন না, তা খুব একটা হয় না।
কালীঘাট কলকাতায় হুগলি নদীর প্রাচীন প্রবাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি ঘাট, যা কালীপূজার কারণে পবিত্র। হুগলি নদীর (গঙ্গা) আদি প্রবাহপথ আদিগঙ্গার তীরে এই কালীক্ষেত্র।
কালীঘাট আজ ভারত-বিখ্যাত তীর্থস্থান। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমাজের শীর্ষ স্তরের মানুষজন, বলিউডের সেলিব্রিটি বা নানা রঙের রাজনীতিবিদ, জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফল মানুষরা ভিড় জমান এই তীর্থস্থানে।
বর্তমান মন্দিরের বয়স ২০০ ছাড়িয়েছে। প্রজাদের মঙ্গল কামনায় বড়িশার শিবদেব রায়চৌধুরী মন্দির নির্মাণে হাট দেন। শেষ হয় পুত্র রামলাল ও ভাইপো লক্ষ্মীকান্তর হাতে। আটচালা এই মন্দিরেও ছিল পোড়ামাটির অলঙ্করণ। আজ সে সব বিনষ্ট। পরবর্তী কালে দফায় দফায় মন্দিরের সংস্কার হয়েছে। শোনা যায়, আরও অতীতে যশোহররাজ প্রতাপাদিত্যর কাকা রাজা বসন্ত রায়ের গড়া আদি মন্দিরটি লুপ্ত। দেবীমূর্তির অধোভাগ দেখা যায় না। মুখ কালো পাথরে তৈরি। দেবীর জিভ, দাঁত, হাত সোনার পাতে মোড়া। হাতের খড়গ আর রুপোর, মুকুট সোনার।
কালীঘাট ৫১টি শক্তিশীঠের অন্যতম। বলা হয়, সতীর ডান পায়ের চারটে আঙুল এখানে পড়েছিল। কিংবদন্তি আছে, এক ভক্ত ভাগীরথী নদীর তীরে একটি উজ্জ্বল আলোর রেখা দেখতে পান। খুঁজে দেখা যায়, মানুষের পায়ের পাতার আকারের একটি প্রস্তর খণ্ড থেকেই আলোটি আসছে। তিনি তার কাছেই নকুলেশ্বর ভৈরবের একটি স্বয়ম্ভূ লিঙ্গও খুঁজে পান। তখন সেই ভক্ত জঙ্গলের মধ্যে কালীর পূজা শুরু করেন।
কালী মন্দিরের উত্তর-পূর্ব কোণে পীঠরক্ষক ভৈরব নকুলেশ্বরের মন্দির।
কলকাতা মেট্রো রেলের কালীঘাট স্টেশন থেকে হেঁটেই পৌঁছে যাওয়া যায় কালীঘাটে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/20/2020