অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

পরেশনাথ মন্দির (কলকাতা)

পরেশনাথ মন্দির (কলকাতা)

জৈনধর্ম প্রাচীন ভারতে প্রবর্তিত একটি ধর্মমত। বর্তমানে বিশ্বের নানা দেশে এই ধর্মমতাবলম্বীদের দেখা যায়। জৈনধর্মের মূল বক্তব্য হল সকল জীবের প্রতি শান্তি ও অহিংসার পথ গ্রহণ। জৈন দর্শন ও ধর্মানুশীলনের মূল কথা হল দৈব চৈতন্যের আধ্যাত্মিক সোপানে স্বচেষ্টায় আত্মার উন্নতি। যে ব্যক্তি বা আত্মা অন্তরের শত্রুকে জয় করে সর্বোচ্চ অবস্থা প্রাপ্ত হন তাঁকে জিন (জিতেন্দ্রিয়) আখ্যা দেওয়া হয়। প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলিতে জৈনধর্মকে শ্রমণ ধর্ম বা নির্গ্রন্থদের ধর্মও বলা হয়েছে। কথিত আছে, তীর্থঙ্কর নামে চব্বিশ জন মহাজ্ঞানী কৃচ্ছ্বসাধকের একটি ধারা পর্যায়ক্রমে জৈনধর্মকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন। এঁদের মধ্যে ত্রাবিংশ তীর্থঙ্কর ছিলেন পার্শ্বনাথ (খ্রিষ্টপূর্ব নবম শতাব্দী) ও সর্বশেষ তীর্থঙ্কর ছিলেন মহাবীর (খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী)। আধুনিক বিশ্বে জৈনধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম হলেও এই ধর্ম বেশ প্রভাবশালী। ভারতে জৈন ধর্মবলম্বীদের সংখ্যা প্রায় ১০,২০০,০০০। এছাড়া উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, দূরপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্বের অন্যত্রও অভিবাসী জৈনদের দেখা মেলে।

জৈনরা প্রাচীন শ্রমণ অর্থাৎ, কৃচ্ছ্বসাধনার ধর্মকে আজও বহন করে নিয়ে চলেছেন। ভারতের অপরাপর ধর্মমত, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষিত হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে বৃত্তিদানের একটি প্রাচীন প্রথা জৈনদের মধ্যে আজও বিদ্যমান; এবং ভারতে এই সম্প্রদায়ের সাক্ষরতার হার অত্যন্ত উচ্চ। শুধু তাই নয়, জৈন গ্রন্থাগারগুলি দেশের প্রাচীনতম গ্রন্থাগারও বটে।

কলকাতার উত্তর-পুবে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ লাগোয়া বদ্রীদাস টেম্পল স্ট্রিটে (গৌরীবাড়ি) জৈনতীর্থ শ্রী প্বার্শনাথ জৈন উপবন মন্দির। নামে পরেশনাথ মন্দির হলেও আসলে ১৮৬৭ সালে রায় বদ্রীদাস মুকিম বাহাদুরের হাতে তৈরি ২৪ জৈন তীর্থঙ্করের অন্যতম শীতলানাথজির (১০ম) মন্দির এটি। আর পরের বছর সুখলাল জহুরী গড়ান জৈন শ্বেতাম্বর মন্দির। মন্দিরে রয়েছে আরও অনেক কিছু। শ্বেতমর্মরের বিগ্রহ, ক্রিস্টাল, ডায়মন্ড, রুবি, মুক্তা, কোরাল ছাড়াও মূল্যবান সব রত্ন, রঙিন কাচ আর মন্দির স্থাপত্যের সূক্ষ্ম কারুকার্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। শিল্পী গণেশ মুসকরের আঁকা ছবিগুলিও সুন্দর। সারা মন্দির জুড়ে রয়েছে বাগিচা। বিমোহিত করে ভক্তদের। ফোয়ারা, জলাশয়, রঙিন মাছ, মর্মর মূর্তি --- সব কিছু মিলিয়ে যেন মর্ত্যের নন্দনকানন। সরোবরের পাড়ে রয়েছে শান্তি ও অহিংসার প্রতীকী মূর্তি -– বাঘে-গরুতে জল খাচ্ছে। বাঁ দিকে পবিত্র প্রান্তিক শিলা। মন্দিরের মূল মূর্তি শীতলানাথজির কপালের ডায়মন্ডটি দর্শকদের দৃষ্টি বিভ্রম ঘটায়। রাসপূর্ণিমায় জাঁকালো উৎসব হয়। ঝলমলে মিছিল বেরোয়। প্রতি দিন সকাল ৬টা থেকে ১২টা এবং বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মন্দির খোলা। বেলগাছিয়া ব্রিজের কাছে দিগম্বর জৈন মন্দিরটিও আরেক আকর্ষণীয় জৈনতীর্থ।

সূত্র: পোর্টাল কনটেন্ট টিম

সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/20/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate