মন্দির, মসজিদ ও গির্জা -- তিন ধর্মের উপাসনাস্থলের গঠনশৈলির মিশ্রণে তৈরি এই অসাধারণ মন্দিরটি। এটি সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদেরও একটি অনুপম নিদর্শন। মন্দিরের ভিতরে বিশাল উপাসনা কক্ষ। বেদীর উপর উপবিষ্ট শ্রীরামকৃষ্ণের শ্বেতমর্মর মূর্তি।
স্বামী বিবেকানন্দ – মাত্র ৩৯টা বছর ছিল তাঁর পরমায়ু। এই ক্ষণজন্মা মানুষটি সারা বিশ্বে কী ব্যাপক আলোড়নই না তুলে দিয়ে গেলেন। ধর্মাচরণকে নতুন ভাবে দেখতে শেখালেন, নতুন ভাবে করতে শেখালেন। গঙ্গার পশ্চিম কূল, বারাণসী সমতুল। এই সেই জায়গা, যেখানে শ্রীরামকৃষ্ণের পূত অস্থি কাঁধে করে বয়ে এনে প্রতিষ্ঠা করেন স্বামী বিবেকানন্দ। গোড়াপত্তন হল বেলুড় মঠের। স্বামী বিবেকানন্দের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৩৬-এ। ১৯৩৮ সালের ১৪ জানুয়ারি উদ্বোধন হয়।
কালক্রমে গড়ে উঠল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মূল দফতর। এই প্রতিষ্ঠান স্বামী বিবেকানন্দের সমাজচিন্তাকে ছড়িয়ে দেওয়া ও আধ্যাত্ম-চর্চার পবিত্র কেন্দ্র হিসেবে বাঙালি সমাজ জীবনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। ৪০ একর জমির উপর অবস্থিত মূল মঠপ্রাঙ্গনে রামকৃষ্ণ পরমহংস, সারদা দেবী, স্বামী বিবেকানন্দের দেহাবশেষের উপর অবস্থিত মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনের সদর কার্যালয় অবস্থিত। এছাড়াও রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ইতিহাসকে তুলে ধরার লক্ষ্যে একটি সংগ্রহশালাও এখানে স্থাপিত হয়েছে। বেলুড় মঠ-সন্নিহিত একটি প্রাঙ্গনে গড়ে উঠেছে রামকৃষ্ণ মিশন অনুমোদিত বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্র। স্বামী বিবেকানন্দের পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে মন্দিরের নকশা নির্মাণ করেছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসের অপর সাক্ষাতশিষ্য স্বামী বিজ্ঞানানন্দ। হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত এই মঠের ধারেই এক দু’তলা বড়িতে স্বামী বিবেকানন্দ থাকতেন। এই বাড়িতেই তিনি দেহ রাখেন। বিবেকানন্দর ব্যবহৃত জিনিসপত্র দেখতে বহু মানুষ এই বাড়িটিতে যান। ফলে একে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। গঙ্গার পাড় ধরে দক্ষিণ দিকে এগোতে একে একে পড়ে ব্রহ্মানন্দ মন্দির, মা সারদার মাতৃমন্দির, স্বামীজির মন্দির ও মহারাজদের সমাধি।
রামকৃষ্ণের স্মৃতিধন্য এই মন্দিরের শোভা দেখতে দেশবিদেশ থেকে বহু পর্যটক এখানে আসেন।
সূত্র: পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/24/2019