দক্ষিণ ২৪টি পরগনা জেলার প্রায় পুরোটাই পলিগঠিত সমভুমি, উত্তর থেকে দক্ষিণে সামান্য ঢালু। ১৮৩০ সালে ড্যাম্পিয়ার ও হজেস নামে দুই জন সার্ভে অফিসার সুন্দরবনের ব-দ্বীপ অঞ্চলের উত্তর সীমা নির্ধারন করেন। এই রেখার নাম হয় ড্যাম্পিয়ার-হজেস রেখা। এর দক্ষিণে সুন্দরবনের কর্দমাক্ত সিক্ত বনাঞ্চল বাদাবন নামে পরিচিত।এই বাদাবন রয়াল বেঙ্গল টাইগারের বাসভুমি। গরাণ, গেঁওয়া, সুঁদরি, গর্জন, হেতাঁল, গোলপাতা ইত্যাদি সুন্দরবনের গাছপালা।
দক্ষিণ ২৪টি পরগনা জেলার নদীগুলির মধ্যে হুগলি,বিদ্যাধরী,পিয়ালী, মাতলা, ইছামতি ও যমুনা প্রধান। হুগলি নদী জেলার পশ্চিম সীমানা ঘেঁষে প্রবাহিত। বাকি নদীগুলি গঙ্গা ও পদ্মার শাখা নদী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম ব্লক মন্দিরবাজার। মন্দিরময় মন্দিরবাজার। মন্দিরবাজার বাস মোড় থেকে অতি স্বল্প দূরত্বের পিচঢালা পথ পৌঁছে দেবে কেশবেশ্বর মন্দিরের প্রাঙ্গণে। আকার, উচ্চতা, স্থাপত্যশৈলী এবং পোড়ামাটির অলঙ্করণে এই মন্দির দক্ষিণ ২৪ পরগণার অন্যতম শ্রেষ্ঠ মন্দির। ৬০ ফুট উঁচু আটচালা মন্দিরটির উপরের থাকে রয়েছে তিনটি ত্রিশুলযুক্ত কলস। মন্দিরের তিন দিকে প্রশস্ত বারান্দা ও রোয়াক। ত্রিখিলান প্রবেশপথ ও অলিন্দ এই মন্দিরের বৈশিষ্ট্য। কেশবেশ্বরের খ্যাতি বিপুল। চড়ক আর শিবরাত্রিতে মেলা বসে এখানে। সে সময় মন্দিরবাজার বাস মোড় থেকেই তীর্থযাত্রীদের লাইন পড়ে যায়। কাছেই হাউরির হাট। নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে চলে আসতে হয় হাউরির মাঠে। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন ভুবনেশ্বর আর যজ্ঞেশ্বর। জোড়া মন্দির আকারে ছোট হলেও মাহাত্ম্যে নয়। এই দুই মন্দিরের সেবাইত নস্কর পরিবার। এই পরিবারের আদিপুরুষ রামচন্দ্র খাঁ ১৫১০ সালে শ্রীচৈতন্যকে ছত্রভোগ থেকে নৌকায় নীলাচলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।
সেই ছত্রভোগএরই ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির। হাউরি থেকে দূরে নয়। ত্রিপুরাসুন্দরীর বিগ্রহ কাঠের। চারহাত বিশিষ্ট দেবীমূর্তির গায়ের রঙ লাল-হলুদ।
কাছেই বড়াশী গ্রাম। হেঁটেই চলে আসা যায়। এখানে রয়েছেন বদ্রিকানাথ বা অম্বুলিঙ্গ। কাছেই চক্রতীর্থ, গঙ্গা-বিষ্ণু-শিব-শক্তির অধিষ্ঠান। প্রতি বছর চৈত্র মাসের নন্দা তিথিতে এই চক্রতীর্থে নন্দার মেলা বসে।
শিয়ালদহ থেকে দক্ষিণ শাখার ট্রেনে মথুরাপুর। তার পর ভ্যানরিকশায় বা অটোয় চেপে ঘুরে নেওয়া যায় এই মন্দিররাজি। ডায়মন্ড হারবার থেকেও বাসে আসা যায় মন্দিরবাজার। সূত্র: পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/23/2020