দক্ষিণ বঙ্গের অন্যতম পর্যটন স্থল শান্তিপুর। শান্তিপুর দর্শন শুরু করতে পারো ফুলিয়া দিয়ে। শান্তিপুরের ৬ কিমি আগে ফুলিয়া। এরই কাছে বয়রা গ্রামে রামায়ণ রচয়িতা কৃত্তিবাসের জন্মস্থান। যেখানে কৃত্তিবাসের জন্মভিটে ছিল সেখানে তৈরি হয়েছে কৃত্তিবাস মন্দির। মন্দিরটি অবশ্য নবীন। কিন্তু কৃত্তিবাসের স্মৃতিতে যে স্তম্ভ এখানে রয়েছে তারই বয়স হয়ে গেল ১০০ বছর। স্মৃতিস্তম্ভের পিছনে এক বিশাল বট গাছ। এই গাছের নীচে বসেই নাকি রামায়ণ লিখতেন কবি। কাছেই ‘যবন হরিদাসের’ ভজনস্থলী। মুসলমান হয়েও শ্রীচৈতন্যের ভক্ত হওয়ায় অসহ্য অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল হরিদাসকে।
বয়রা এখন কৃত্তিবাস। সেই কৃত্তিবাস থেকে চলে আসতে পারো শান্তিপুরের শহরতলি বাবলায়। এই বাবলাই বৈষ্ণবতীর্থ শান্তিপুরের আসল আকর্ষণ। শান্তিপুর বাইপাসের ধারে বাবলা। আমবাগানের মাঝ দিয়ে পথ। আম গাছের ডাল নেমে এসেছে অনেক নীচে। সেই সব ডাল এরিয়ে সাবধানে পৌঁছতে হয় নিমাইয়ের শিক্ষাগুরু অদ্বৈতাচার্যের সাধনপীঠে। অদ্বৈতাচার্যকে নিমাইয়ের শিক্ষাগুরু বললে অবশ্য কম বলা হয়। কঠোর সাধনায় নিমাইকে মর্ত্যে এনেছিলেন অদ্বৈতাচার্য, এই কাহিনি শান্তিপুরের লোকের মুখে মুখে ফেরে। এ কারণেই অদ্বৈতাচার্যকে বলা হয় গৌর-আনা ঠাকুর। গৌরাঙ্গ, নিত্যানন্দ ও অদ্বৈতাচার্যের মিলন ঘটেছিল এই বাবলায়। সন্ন্যাস গ্রহণের পর এখানেই নিমাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল শচীমায়ের। এই সাধনপীঠে দশ দিন থেকে সন্ন্যাসীপুত্রের সেবা করেছিলেন শচী মাতা। অদ্বৈতাচার্যের বংশেই জন্ম আরেক বৈষ্ণবসাধক বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর তথা জটিয়াবাবার। তাঁরও স্মৃতিমন্দির রয়েছে এখানে।
বাবলা দেখে চলে এসো শহর শান্তিপুরে। রিকশা বা বাসে আসতে পারো। দেখে নাও শ্যামচাঁদ, গোকুলচাঁদ, জলেশ্বর মহাদেব ও আগমেশ্বরী।
শান্তিপুরের প্রধান আকর্ষণ রাস উৎসব। শান্তিপুরে রাস হয় নবদ্বীপের পরের দিনে। ৪ দিন ধরে উৎসব। তৃতীয় রাতে ভাঙা রাসের বর্ণাঢ্য মিছিলের প্রশস্তি আজ ভারত ছারিয়ে সাড়া বিশ্ব জুড়ে। আর রাস উৎসবের সমাপ্তি হয় চতুর্থ দিনে ঠাকুর নাচান অনুষ্ঠানের পর।
সূত্র:পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/7/2019