যারা পাখি ভালবাস তাদের জন্য আইডিয়াল উইকেন্ড ডেস্টিনেশন হল কুলিক। কলকাতা থেকে প্রায় ৪২৫ কিলোমিটার দূরের শহর রায়গঞ্জ। সেই রায়গঞ্জ শহরের খুব কাছেই, একেবারে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে, এ রকম একটা পাখিরালয় আছে, তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। প্রায় ১৬৪ রকমের পাখি প্রতি বছর দেখতে পাওয়া যায় এখানে। একটা-দু’টো নয়, সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। চিল বা পেঁচা তো বটেই, দেখতে পাওয়া যায় মাছারাঙা, ফ্লাইক্যাচার, ড্রংগো, এগ্রেট, স্টর্ক, হেরন-এর মতো পরিযায়ী পাখিও। আমাদের দেশি পাখিরা তো এখানকারই অধিবাসী-- মাছরাঙা, কাঠঠোকরা, ফিঙে, বাজ, চিল, পেঁচা । যারা পাখি ভালোবাস না, তারা কাছের সাপনিকলা জঙ্গলে যেতে পারো। এই জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে-হাঁটতে দেখে নিতে পারো এখানকার সুবিশাল জলাশয়টি। থাকার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন বিভাগের হোটেল । পাখিরালয়ে প্রবেশ ফটকের উল্টো দিকে জাতীয় সড়কের ধারে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সামাজিক অরণ্যায়ন কর্মসূচির অধীনে ১৯৭০ সাল থেকে এলাকাটির বিকাশ ঘটানো শুরু হয়। দফতর থেকে এলাকা জুড়ে ইউক্যালিপটাস, কদম, জারুল, শিশু প্রভৃতি গাছ লাগানো হয়। এই গাছগুলি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পর্ণমোচি উদ্ভিদের অরণ্যের গাছ হিসেবে পরিচিত। এই কৃত্রিম অরণ্যে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির আনাগোনা শুরু হতেই ১৯৮৫ সালে একে ‘রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য’ বলে ঘোষণা করা হয়। এর পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে কুলিক নদী। তাই এটি কুলিক পাখিরালয় নামেও চিহ্নিত।
অনেকেই দাবি করেন, কুলিক পাখিরালয় ভারতের মধ্যে আয়তনে দ্বিতীয়। এই দাবি সত্য-মিথ্যা যা-ই হোক, তাতে পাখিরালয়ের কোনও ক্ষতি-বৃদ্ধি হয় না। অভয়ারণ্যের আয়তন ১.৩ বর্গ কিলোমিটার। কোর এলাকা ০.১৪ বর্গ কিমি, বাকিটা বাফার এলাকা। কুলিক নদী পাখিরালয়ের দক্ষিণ ও পূর্ব সীমানা রচনা করেছে। অসংখ্য ছোট-বড় খাল কুলিকের সঙ্গে যুক্ত। ফলে বর্ষায় পাখিরালয়ে জল ঢুকে যায়। সেই সময় পাখিদের উপযোগী প্রচুর খাদ্য পাওয়া যায়, বিশেষ এশিয়ান ওপেনবিলের মূল খাদ্য অ্যাপেল স্নেল। প্রধান ফটক দিয়ে পাখিরালয়ে ঢোকার পর খানিকটা হাঁটলে পাওয়া যায় নজরমিনার। সেখান থেকে পাখি দেখার অভিজ্ঞতা ভোলার নয়।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/29/2019
মালদহ (রথবাড়ি মোড়) থেকে ৩৪ জাতীয় সড়ক ধরে ফারাক্কাম...