মালদহ (রথবাড়ি মোড়) থেকে ৩৪ জাতীয় সড়ক ধরে ফারাক্কামুখী দক্ষিণে ৩ কিমি যেতেই বাঁ হাতি পথ। মহদিপুরগামী সেই পথে ৭ কিমি গিয়ে পিয়াসবারি বা পিয়াজবাড়ি। এখান থেকে ডান হাতি পথে ৩ কিমি জুড়ে গৌড়ের অতীত রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ। রাজা শশাঙ্ক থেকে দেবপালের আমল পর্যন্ত গৌড়ের স্বর্ণযুগ বলে চিহ্নিত। পালদের হাত থেকে সাম্রাজ্য যায় সেনেদের হাতে। তার পর শুরু হয় নবাবি শাসন। ভেঙে পড়া প্রাচীন মসজিদ, মিনার, প্রাসাদ আজও অতীতের সমৃদ্ধির কথা বলে। গৌড় দর্শনার্থীদের প্রথম দ্রষ্টব্য পিয়াস বারি। বাড়িটি আজ লুপ্ত হলেও রয়েছে ৩৩ একর ব্যাপ্ত দিঘি। পিয়াসবারির পশ্চিমে বৈষ্ণবতীর্থ রামকেলি। শ্রীচৈতন্য এসেছিলেন এখানে। তমালতলের ছোট্ট মন্দিরে পাথরের বুকে নাকি রয়েছে তাঁর পদচিহ্ন। এখানে রয়েছে মদনমোহন জিউ মন্দির, ৮টি কুণ্ড। রামকেলিকে বলা হয় গুপ্ত বৃন্দাবন। রামকেলি থেকে আধ কিমি দক্ষিণে বারোদুয়ারি বা বড়সোনা মসজিদ। রয়েছে উত্তরমুখী দাখিল দরওয়াজা। এখান থেকে ১ কিমি দূরে ফিরোজ মিনার, সেখান থেকে আধ কিমি যেতে কদম রসুল মসজিদ। এর পর নেক বিবির সমাধি, চিকা মসজিদ, দাতন মসজিদ, লুকোচুরি গেট, বাইশগজি প্রাচীর, রয়্যাল প্যালেস, কোতোয়ালি দরওয়াজা, ছোটসোনা মসজিদ, তাঁতিপাড়া মসজিদ, লোটন মসজিদ, গুণমন্ত মসজিদ, চামকাটি মসজিদ প্রভৃতি।
গৌড় দর্শন শেষে শহরে ফিরে এ বার চলো পাণ্ডুয়া। ৩৪ জাতীয় সড়ক ধরে মহানন্দা পেরিয়ে ১৬ কিমি গিয়ে পাণ্ডুয়া। পাণ্ডুয়ার প্রধান আকর্ষণ সিকন্দর শাহ ও গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের আমলে নির্মিত বিখ্যাত আদিনা মসজিদ। তিন দিক বিধ্বস্ত হলেও পশ্চিম আজও মধ্যযুগীয় স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আদিনার ১ কিমি দূরত্বে সুলতান সিকন্দর শাহের গড়ের ধ্বংসাবশেষ সাতাশঘরা। পান্ডুয়ার অন্যান্য দ্রষ্টব্যগুলি হল বড়ি দরগাহ, সালামি দরওয়াজা, ছোটি দরগাহ, একলাখি মসজিদ, কুতবশাহি মসজিদ।
মালদহের কাছেই বল্লাল সেনের কীর্তি বড় সাগরদিঘি। রয়েছে বল্লালের দুর্গ ও মাটির প্রাকারের ধ্বংসাবশেষ। যেতে পারো মালদহের ৩৫ কিমি দক্ষিণে ফারাক্কা ব্যারেজ দেখতে।
নিকটতম স্টেশন মালদা টাউন । বাসও যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের নানা জায়গা থেকে মালদহে। মালদহ থেকে ট্যাক্সি, টাঙ্গা বা বাসে গৌড়-পাণ্ডুয়া ঘুরে নেওয়া যায়। বাসে করে গৌড় যেতে হলে পিয়াসবারিতে নামতে হবে।
মালদহে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের মালদা ট্যুরিস্ট লজ। পিয়াসবারিতে জেলা পরিষদের ট্যুরিস্ট লজ আছে। রায়গঞ্জে স্টেশনের কাছে জেলা পরিষদের বাংলো। এ ছাড়া, মালদহ শহরে অনেক বেসরকারি হোটেল আছে। সপ্তাহ শেষে দু’টো কাটিয়ে আসার আদর্শ জায়গা মালদহ।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/30/2020
যারা পাখি ভালবাস তাদের জন্য আইডিয়াল উইকেন্ড ডেস্টি...