হাওড়া মানেই শুধু রেল স্টেশন এমনটা যারা ভাবে তাদের ভুল ভাঙানোর জন্য আদর্শ জায়গা উলুবেড়িয়ার পাশেই গড়চুমুক। দামোদর আর গঙ্গার সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এই জায়গাটা ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ। অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্যের সঙ্গে শান্ত পরিবেশ মন জুড়িয়ে দেবে। যারা শুধু নদী দেখে সময় কাটাতে চাও না, তাদের জন্য রয়েছে ডিয়ার পার্ক। যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাস, তারা নদীতে নৌকাবিহারে যেতেই পার। হাওড়া থেকে ট্রেন উলুবেড়িয়া হয়ে বাসে বা ধর্মতলা থেকে বাসে গড়চুমুক বেশিক্ষণ নয়। থাকা-খাওয়ার জন্য হাওড়া জেলা পরিষদের বাংলোয় ছিমছাম ব্যবস্থা আছে। তাই শহরের হট্টগোল এড়াতে এখনও ততটা জনপ্রিয় না হয়ে ওঠা গড়চুমুক ঘুরে আসতেই পারো।
গড়চুমুকে দু’টি নদীর মাঝে বনাঞ্চল। সেখানেই অবস্থিত ‘মৃগদাব’ ইতিমধ্যেই মিনি জু হিসেবে ঘোষিত। প্রতি বছরই নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত চুটিয়ে বনভোজন চলে। পর্যটকদের ভিড়ও হয় প্রচুর। নদীর ধার ঘেঁসেই মৃগদাবে বিচরণের পথ। ইউক্যালিপটাস-ঝাউ-চন্দন-জারুল-শিশু-বাবলা-কৃষ্ণচূড়া-রাধাচূড়ায় পথ ছাওয়া। তাই হাঁটায় লাগাম থাকবে না। বেশ কিছু হরিণের অস্থির পদচারণা, সশঙ্ক দৃষ্টিপাত এবং দে ছুট। ময়ূর পেখম মেলে। গুটি গুটি পায়ে শজারু এসে আলাপ করে যায়। নীলগাই হাই তোলে।
নৌকাবিহারে যাবে? মাঝি হাঁক পাড়ে। ভালো ছত্রি দেওয়া হাতনৌকা আছে, আছে মডার্ন মেশিন বোট।
সবাই বলে বটে, হুগলি আর দামোদরের সঙ্গমে গড়চুমুক। আসলে দামোদর বা হুগলি, দুই নদীই এখান থেকে অল্প দুরে। এখানে যে নদীতে নৌকাবিহার হয় সেটা চেহারায় নদী হলেও আসলে খাল—দামোদর আর হুগলিকে জুড়েছে। পুবে হুগলি, পশ্চিমে দামোদর। দুই নদীর মিলন ঘটাতে খাল কাটা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। সেই খাল এখন লোকের মুখে মুখে নদী। সেই খালের উপর বাঁধ, উলুঘাটা ৫৮ গেট। সেই বাঁধের উপর সেতু পেরোলেই গড়চুমুক। আক্ষেপ একটাই, গড়চুমুক থেকে জেলা পরিষদের আয় যথেষ্ট হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও গড়চুমুকের পরিকাঠামোর এখনও বেশ কিছুটা উন্নয়ন প্রয়োজন।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/16/2020