চন্দননগরের কথা নতুন করে কিছু বলার নেই। এ রকম স্ট্র্যান্ড এই বঙ্গে খুব কমই আছে। পরিচ্ছন্ন, সুন্দর। এক দিকে গঙ্গা, আর অন্য দিকে হর্ম্যরাজি। তার মধ্যে কিছু নতুন, আর কিছু ঔপনিবেশিক কালের। প্রাতর্ভ্রমণ আর সান্ধ্যভ্রমণের আদর্শ জায়গা। শীতের দুপুরটা তো সারা দিনই কাটানো যায় গঙ্গার পাড়ে বসে। কল্পনায় ফিরে যাওয়া যায় অতীতে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে বজরা। তাতে বসে জ্যোতিদাদা, নতুন বৌঠান আর রবি। নতুন গান বেঁধেছে রবি। তাই শোনাচ্ছে সে তার নতুন বৌঠানকে। গঙ্গার ও-পারে জগদ্দলের পরিত্যক্ত চটকল তার বিশাল চত্বর নিয়ে দাঁড়িয়ে। শীতের দিনে গণ্ডাকয়েক পিকনিক পার্টি আসর বসায় যার প্রাঙ্গণে।
কলকাতা থেকে ৩৭ কিমি দূরে অতীতের ফরাসি কলোনি আজকের চন্দননগর। গঙ্গার তীরে শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশ। নদীর তীরে ভূ-কৈলাসের রানির তৈরি পাথরে বাঁধানো স্ট্র্যান্ড লাগোয়া বিদ্যাসাগর ও রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত মোরাম সাহেবের তৈরি পাতালবাড়ি আজও স্মৃতি রোমন্থন করায়। উল্টো দিকে অল্প উত্তরে সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট। লাগোয়া ফরাসিদের তৈরি ইন্সতিতিউত দে চন্দেরনগর, এক কালের দ্যুপ্লে প্যালেস, আজকের চন্দননগর মিউজিয়াম। ফরাসি রাজত্বের নানা স্মারক অতীতে নিয়ে যায়। এমনকী বিশ্বাসহন্তা নরেন গোস্বামীকে হত্যার রিভলভারটিও প্রদর্শিত মিউজিয়ামে। আর রয়েছে ফরাসি ইনস্টিটিউট, রোমান ক্যাথলিক চার্চ, সমাধিভূমি, দ্যুপ্লে কলেজ (বর্তমানে কানাইলাল বিদ্যামন্দির), রবীন্দ্র ভবন, নন্দদুলাল, বিশালাক্ষী ও দেবী ভুবনেশ্বরীর মন্দির। ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক। ১৩ কিমি দূরে শ্রীরামপুর, যা এক সময়ে ছিল দিনেমারদের (ডেনমার্কের অধিবাসী) কলোনি। নিকটতম রেলস্টেশন হাওড়া-বর্ধমান লাইনে চন্দননগর। থাকার জায়গা মিউনিসিপাল গেস্ট হাউস – চন্দননগর পৌরসভা। এ ছাড়া বেসরকারি কয়েকটি হোটেল আছে। চন্দননগরের প্রধান আকর্ষণ জগদ্ধাত্রী পুজো। ভদ্রেশ্বর থেকে চন্দননগর পর্যন্ত প্রায় শতাধিক পুজো হয়। আলোর রোশনাইয়ে কেটে যায় রাতের অন্ধকার। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন নিগম ও আই টি ডি সি কন্ডাক্টেড ট্যুরে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো দেখায়।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/10/2020