দার্জিলিং জেলা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অংশে অবস্থিত। দার্জিলিং জেলা মনোরম শৈলশহর ও দার্জিলিং চায়ের জন্য বিখ্যাত। দার্জিলিং এই জেলার সদর শহর। কালিম্পং, কার্শিয়ং ও শিলিগুড়ি হল এই জেলার অপর তিন প্রধান শহর। এই জেলার অপর গুরুত্বপূর্ণ শহর মিরিক একটি বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র।
ভৌগোলিকভাবে এই জেলা দুটি অঞ্চলে বিভক্ত - পার্বত্য অঞ্চল ও সমতল। এই জেলার গোটা পার্বত্য অঞ্চলটি বর্তমানে গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন নামে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনস্থ এক আধা-স্বায়ত্ত্বশাসন সংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত। এই এলাকা দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়ং মহকুমায় বিভক্ত। দার্জিলিং হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সমভূমিতে শিলিগুড়ি মহকুমা অবস্থিত। এই সমভূমি তরাই নামেও পরিচিত। এই জেলার উত্তরে সিক্কিম রাজ্য, দক্ষিণে বিহার রাজ্যের কিশানগঞ্জ জেলা, পূর্বে জলপাইগুড়ি জেলা ও পশ্চিমে নেপাল। ২০১১ সালের হিসেব অনুসারে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পরেই এই জেলা পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন জনসংখ্যা-বহুল জেলা।
দার্জিলিং শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ভাষার শব্দ "দুর্জয় লিঙ্গ" থেকে। এর অর্থ " অদম্য ক্ষমতার অধিকারী শিব, যে হিমালয় শাসন করে"।
দার্জিলিং-এ বেড়ানোর জায়গা অজস্র। পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য এই জেলা। তবে চেনা জায়গাগুলির বাইরেও নিয়তই তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র।
এক জোড়া হ্রদ, সেই থেকে নাম জোড়পোখরি। হিমালয়ের কোলে এই ছোট্ট গ্রামটি এখনও ভিড়ের খপ্পরে পড়েনি। তাই আর পাঁচটা গড়পড়তা ‘টুরিস্ট স্পট’ হয়ে ওঠার আগেই ঘুরে এসো এই অসাধারণ জায়গাটাতে। শিলিগুড়ি থেকে জোড়পোখরি খুব-একটা দূরে নয়, বরং মাত্র ৮৫ কিলোমিটার। লেকের জলে রাজহাঁস, আর সামনে কাঞ্চনজঙ্ঘার রাজকীয় ভিউ, কারও যদি মাথায় কবিতা আসতে থাকে, অবাক হওয়ার কিছু নেই। যারা দার্জিলিংয়ের হোটেল থেকে সূর্যোদয় দেখতে অভ্যস্ত, তাদের জন্য রীতিমতো ‘ব্রেথটেকিং’ অভিজ্ঞতা হতে পারে জোড়পোখরি। কাছেই সেঞ্চল জঙ্গলেও বেড়িয়ে আসতে পারো মন চাইলেই। দার্জিলিং-ঘুম-মিরিক পথে পশ্চিমবঙ্গ-নেপাল সীমান্তে ৭৪০০ ফুট উচ্চতায় জোড়া পুকুর তথা জোড়পোখরি, দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে। পশুপতিনগর (নেপাল)-এরও পথ পৃথক হয়েছে জোড়পোখরি থেকে।
৪ কিলোমিটার দূরে লেপচাজগৎ। নীল আকাশের নীচে ধুপি, গুরাস, চাপ, কাওলা, কারতুস, উতিস ও পাইনে ছাওয়া আদিগন্ত সবুজে মোড়া স্বর্গরাজ্য লেপচাজগৎ। বাঁয়ে সিকিম, সমুখে দার্জিলিং আর সামনে সুখিয়া। রাতে দার্জিলিং-এর আলোকমালা কেমন মায়াময় মনে হয়। দেখে মনে হয় হিরে-জহরতের সাথে মরকতের সাজ পরেছে পাহাড়। লেপচা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘাও দেখা যায়। দলছুট মেঘেরা নীল আকাশে ভেসে বেড়ায়। প্রকৃতি বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন সাজে সেজে মোহময়ী হয়। নানা জাতের পাখির কলকাকলি মন ভরিয়ে দেয় লেপচায়। রাজ্য সরকারের নেচার রিসর্ট আছে লেপচায়। সেখানে রাত কাটানো এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019