পলাশি বাজার পেরিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ছেড়ে বাঁ হাতি অপ্রশস্ত রাস্তাটা চলে গেছে পলাশির সেই প্রান্তরে, যেখানে বাঙালির খুনে লাল হয়েছিল ক্লাইভের খঞ্জর। সেই আম্রকানন আজ আর নেই। মাত্র দু’ একটা নমুনা রয়েছে পাশেই পূর্ত দফতরের ইন্সপেকশন বাংলোয়। এখন সেই যুদ্ধ প্রান্তরে রয়েছে একটি স্মারক; এই স্মারকই একটা ইতিহাস। ব্রিটিশের বাংলা জয়ের এই স্মারক তৈরি হয়েছিল ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে। এই স্মারক উৎপাটনের দাবিতে এক সময় এলাকার মানুষ সরব হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু স্মারক ভেঙে দিলেই কি ইতিহাস মুছে ফেলা যায়? যা-ই হোক, শুভবুদ্ধির উদয় হয়। সেই আন্দোলন থেমে যায়। এখন সেই স্মারকের পাশেই বসেছে সিরাজের আবক্ষ মূর্তি। সিরাজদ্দৌলাকে উল্লেখ করা হয়েছে ‘ব্রিটিশ বেনিয়া বশ্যতা বিরোধী জেহাদি নায়ক’ হিসাবে। পথের পাশে বসেছে আর একটি স্মারক। তাতে স্মরণ করা হয়েছে সিরাজ, মীরমদন আর মোহনলালকে। তাতে লেখা, “পরদেশগ্রাসীদের বিজয়স্তম্ভ নয়/সিরাজ, মীরমদন, মোহনলালের নাম হোক অক্ষয়”। বিজয়স্মারককে বেড় দিয়ে যে রাস্তা নেমে গেছে পিছন দিয়ে, সেই পথে চলো। লাল মোরাম পথ ফেলে রেখে ধরো আলপথ। পৌঁছে যাবে আর এক ঐতিহাসিক স্থানে। তিন বীরের রক্তমাখা এখানকার মাটি। সে দিন, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন, এই জায়গাতেই যুদ্ধ করতে করতে প্রাণ দিয়েছিলেন গোলন্দাজবাহিনীর প্রধান মীরমদন, ক্যাপ্টেন নওবে সিং হাজারি আর বন্দুকধারী সৈনিকদের কমান্ডার বাহাদুর আলি খান। তাঁদের সম্মানে এখানেও রয়েছে একটি স্মারক। দেখেই বোঝা যায় তবে যত্নআত্তি হয় না।
ইতিহাস রোমন্থন করে যদি এখানে থাকতে চাও তা হলে আছে পূর্ত দফতরের ইন্সপেকশন বাংলো। নইলে থাকতে হবে কৃষ্ণনগরে। এই বাংলোকে ডান দিকে রেখে যে রাস্তা চলে গেছে তা একটু দূরেই পৌঁছে গেছে ভাগীরথীর ঘাটে। দু’ দণ্ড কাটাতে মন্দ লাগবে না সেখানে। কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে সরাসরি পলাশি। সেখান থেকে ভ্যানরিকশা। নইলে কলকাতা থেকে বাসে পলাশি বাজার, সেখান থেকে ভ্যানরিকশা।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/4/2019