ছোট একটি গ্রাম প্রকৃতির নিয়মে হয়ে উঠেছে মোহময়ী সৌন্দর্যের লীলাভূমি। লাল মোরামের রাস্তাটা উঠে গেছে বাঁধের উপর। তার পর সেই রাস্তা সুবিশাল হ্রদ পেরিয়ে ডান দিকে বাঁক নিয়েছে। ওই বাঁকের পরেই গাছপালার আড়ালে বড়ন্তি। তোমাদের এ বারের গন্তব্য। কলকাতা থেকে মাত্র ২৫০ কিলোমিটার দূরে পুরুলিয়ার একটি ছোট্ট গ্রাম বড়ন্তি। শাল, সেগুন, মহয়া গাছের ছায়ায় ঘেরা। নিবিড় অরণ্যের বুকে জনা বিশেক পরিবার নিয়ে এই গ্রাম। আর তার পাশেই ছোট ছোট টিলাকে সঙ্গী করে দাঁড়িয়ে এক আশ্চর্য হ্রদ মুরাডি। প্রচুর পাখি আর প্রজাপতির আনাগোনা এখানে। পূর্ণিমার রাতে চাঁদ যখন লুটোপুটি খায় হ্রদের জলে, মোহময়ী হয়ে ওঠে বড়ন্তি। প্রকৃতির এই রূপ ভোলার নয়।
আশেপাশে, চারিদিকে প্রচুর টিলা। টিলা বলে তুচ্ছ করার মতো নয়। কারণ এদের সৌন্দর্য উচ্চতায় নয়, উপস্থিতিটাই বড় কথা। পাহাড়গুলো সবুজ। বর্ষায় সবক’টার বুকেই ঝরনা। তাই অবিরাম ঝিরঝির শব্দ সুর শুনিয়ে যায়।
বড়ন্তি আসতে হলে পৌঁছতে হবে মুরাডি। আর মুরাডি আসা যায় দু’দিক থেকেই। হাওড়া থেকে রাতের আদ্রা-চক্রধরপুর প্যাসেঞ্জার ধরো। সক্কালে পৌঁছে যাও আদ্রা। সেখান থেকে আসানসোল প্যাসেঞ্জারে মুরাডি। কিংবা হাওড়া থেকে আসানসোল ট্রেনে। অনেক ট্রেন। সেখান থেকে আদ্রা প্যাসেঞ্জারে মুরাডি মাত্র আধ ঘণ্টার পথ। আসানসোল-আদ্রা রেলপথে একটি প্রায়-নির্জন ছোট্ট রেল স্টেশন, নাম মুরাডি। স্টেশন থেকে রিকশা বা গাড়ি। গ্রাম মুরাডির ব্যস্ততা কাটিয়ে নির্জনতার সঙ্গী হতে সময় লাগবে না। গ্রাম ছাড়াতেই পড়বে লাল মাটির পথ। পাহারগুলো সঙ্গী হবে অচিরেই। পিছিয়ে থাকবে না হ্রদ। সে-ও ধরা দেবে পিছুপিছু। আর তখনই হ্রদের ও-পার থেকে হাতছানি দেবে বড়ন্তি।
নিয়মিত পর্যটকদের পা পড়ে বলে এতটুকু ছোট গ্রাম বড়ন্তিতে রাত কাটানোর জায়গা আছে তিনটি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সপ্তাহন্তে প্রকৃতির মাঝে ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা বড়ন্তি।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 9/12/2019