পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলাটি অতীতে বৃহত্তর কামরূপ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। কামরূপের রাজধানী দ্বিধাবিভক্ত হলে কোচবিহার ‘কামতা’-র অন্তর্গত। সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে রচিত শাহজাহাননামা গ্রন্থে কোচবিহার নামটির উল্লেখ পাওয়া যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে মেজর রেনেলের মানচিত্রে কোচবিহার ‘বিহার’ নামে উল্লিখিত হয়। ১৭৭২ সালে ভুটানের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে কোচবিহার-রাজ ধৈর্যেন্দ্র নারায়ণ ও ওয়ারেন হেস্টিংসের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে কোচবিহার ব্রিটিশদের একটি করদ রাজ্যে পরিণত হয়। ১৭৭৩ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে রাজ্যটি "কোচ বিহার" নামে পরিচিত হয় এবং এর রাএজধানীর নাম হয় "বিহার ফোর্ট"। উল্লেখ্য, "কোচবিহার" শব্দটির অর্থ "কোচ জাতির বাসস্থান"। কোচবিহারের অন্যতম পর্যটনস্থল রসিকবিল।
তুফানগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে একটু দূরেই রসিকবিল একটা বিশাল হ্রদ। নিউ কোচবিহার রেল স্টেশন থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে তিনদিক জঙ্গলে ঘেরা এই হ্রদটিতে প্রচুর পাখি দেখতে পাওয়া যায়, আর তাদেরকেই মূল আকর্ষণ করে গড়ে উঠেছে এক জমজমাট ছুটি কাটানোর জায়গা। পর্যটক টানার জন্য এখানে আছে একটি ডিয়ার পার্ক, আছে একটি বড়সড় অ্যাকোয়ারিয়ামও। রসিকবিলের জঙ্গলে ঘেরা নিস্তব্ধতার মধ্যে শান্ত জলে নৌকোবিহার একটা অন্যরকম অভিজ্ঞতা। নৌকায় চেপে রঙ-বেরঙের চেনা-অচেনা অনেক পাখি আর প্রজাপতি দেখে নেওয়া যায়। জুন মাসের আগে গেলে দেখতে পাবে রেড ক্রেস্টেড পোচার্ডের মতো প্রচুর বিরল পাখি। দল বেঁধে বেড়ানোর জন্য থাকার জায়গাও পাবে বনবিভাগের কটেজে। শুধু ডিয়ার পার্ক আর অ্যাকোয়ারিয়ামই নয়, পর্যটক আকর্ষণের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে চিলড্রেন্স পার্ক, কাচে ঘেরা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। চিতাবাঘ, ময়ূর, ঘড়িয়াল, অজগর ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাণীর সংরক্ষণ কেন্দ্র হয়েছে বাংলো লাগোয়া। কোচবিহারের রাজাদের মৃগয়াভূমি ছিল এই রসিকবিল। রসিকবিল তো নতুন নাম। এক সময় এর নাম ছিল বোচামারি বিল। আর জায়গাটার নাম নাগুরহাট বা আটিয়ামোচর। বিলকে ঘিরে নাগুরহাট ও আটিয়ামোচর শাল-সেগুন-শিশুর বনাঞ্চল – সাঁকোতে পারাপার। আলিপুরদুয়ার থেকে ২৪ আর কোচবিহার থেকে ৪৫ কিমি দূরে রসিকবিল। আসা যায় বাসে। ৬ কিমি দূরে কামাখ্যাগুড়ি স্টেশন। আসা যায় বাসে বা রিকশায়। রসিকবিলে থাকতে পারো বিলের পাড়ে বন দফতরের বাংলোয়।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/31/2019