বাঙালির অতি প্রিয় দি-পু-দা। সেই দি-পু-দার প্রথম জন দিঘা। বাকি দু’জন পুরী আর দার্জিলিং। সমুদ্র বলতেই বাঙালির ফার্স্ট চয়েস দিঘা। সপ্তাহান্তের ছুটিতে পরিবারের অন্যদের বা বন্ধুদের সঙ্গে হৈ চৈ করা আর সমুদ্রের জলে গা ভেজানোর জন্য হাতের কাছের দিঘা সবারই প্রিয়। দিঘার বেলাভূমি শক্ত, জমাট। ভারতের সব চেয়ে শক্ত সৈকত। এই সৈকতভূমি দিয়ে গাড়ি ছোটে অনায়াসে। হেলিকপ্টারও নামতে পারে এই সৈকতে। হাওড়া থেকে ট্রেন চালু হওয়ায় দিঘায় যাওয়া এখন আরওই সুবিধাজনক হয়ে গেছে। দিঘার সমুদ্রস্নানের উপযুক্ত হলেও সমুদ্র অনেকটা এগিয়ে আসায় কংক্রিট দিয়ে বাঁধানো হয়েছে পাড়। বাজারের কাছে অনেকটা জায়গা জুড়ে পর্যটকদের স্নানের ভিড় লেগে থাকে। যাত্রী চাহিদা মেটাতে দিঘার সৈকত প্রসারিত হয়েছে নিউ দিঘা পর্যন্ত। নিউ দিঘার সৈকতটি তুলনায় প্রশস্ত, ঝাউগাছে মোড়া। দিঘায় থেকে বেড়িয়ে নেওয়া যায় সর্প উদ্যান, মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম, দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র, সায়েন্স পার্ক প্রভৃতি। আরও এগিয়ে একেবারে ওড়িশা র লাগোয়া উদয়পুর সৈকত। কিয়াগেড়িয়া মোড় থেকে বাঁ দিকে যে রাস্তা বরাবর সমুদ্রে গিয়ে পড়েছে তার ডান দিকে ওড়িশা আর বাঁ হাতে পশ্চিমবঙ্গ। সেই রাস্তা মিশে গিয়েছে উদয়পুর সৈকতে। বছরকয়েক আগেও উদয়পুর ছিল নিরিবিলি, নির্জন। আজ জমজমাট। এখন যেন পর্যটকদের মেলা বসে। রকমারি বিনোদনের আয়োজন সেই সৈকতে। আগে এখানে থাকার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। এখন পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের নৈশাবাসের ক্যাম্প আছে। দিঘা থেকে ঘুরে আসা যায় ৬ কিলোমিটার দূরের চন্দনেশ্বর মন্দির। ওড়িশা র এই মন্দির জনপ্রিয় হয়েছে দিঘা ভ্রমণকারীদের বদান্যতায়। ২ কিলোমিটার দূরে যাওয়া যায় তালসারি সমুদ্রসৈকত। এখানেও দু’টো দিন কাটানো যায়, ওড়িশা পর্যটনের পান্থনিবাসে। হাওড়া থেকে বাস পাওয়া তো যায়-ই, প্রতি দিনই ট্রেন-ও যাচ্ছে দিঘায়। কলকাতার বিভিন্ন জায়গা (ধর্মতলা, লেকটাউন, করুণাময়ী, উল্টোডাঙা, গড়িয়া প্রভৃতি) থেকে সারা দিন ধরেই বিভিন্ন সময়ে দিঘার বাস যাচ্ছে। এ ছাড়াও আসানসোল, বর্ধমান, দুর্গাপুর, হলদিয়া, মেদিনীপুর ইত্যাদি পশ্চিমবঙ্গের বড় শহরগুলি থেকে দিঘার বাস ছাড়ে। দিঘা শহরে ঢোকার মুখে সমুদ্র সৈকত থেকে কিছুটা দূরে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের ট্যুরিস্ট লজ। শহরের শুরুতেই দিঘা ডেভেলপমেন্ট স্কিমের সৈকতাবাস। এ ছাড়া রয়েছে বেনফিশের হোটেল মীনাক্ষি। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের কলকাতা অফিস থেকেও বেনফিশের হোটেল বুকিং করা যায়। আর ডিরেক্টরেট অব সোশাল ওয়েলফেয়ার-এর কল্যাণ কুটির রেস্ট হাউস। এছাড়াও দিঘা ও নিউ দিঘা জুড়ে নানান সংস্থার হলিডে হোম ও বেসরকারি অজস্র হোটেল রয়েছে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019