প্রেমেন্দ্র মিত্র (জন্ম ১৯০৪ – মৃত্যু ৩ মে, ১৯৮৮) একজন কবি, ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক এবং চিত্রপরিচালক। তাঁর সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় চরিত্র ঘনাদা।
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে ঢাকা থেকে কলকাতায় এসে গোবিন্দ ঘোষাল লেনের একটি মেসে থাকার সময় ঘরের জানলার ফাঁকে একটি পোস্টকার্ড আবিষ্কার করেন। চিঠিটা পড়তে পড়তে তাঁর মনে দু’টো গল্প আসে। সেই রাতেই গল্পদু’টো লিখে পর দিন পাঠিয়ে দেন জনপ্রিয় পত্রিকা প্রবাসীতে। ১৯২৪ সালের মার্চে প্রবাসীতে 'শুধু কেরানী' আর এপ্রিল মাসে 'গোপনচারিণী' প্রকাশিত হয়, যদিও সেখানে তাঁর নাম উল্লেখ করা ছিল না। সেই বছরেই কল্লোল পত্রিকায় 'সংক্রান্তি' নামে একটি গল্প বেরোয়। এর পর তাঁর মিছিল এবং পাঁক নামে দু’টি উপন্যাস বেরোয়। প্রেমেন্দ্র মিত্রের প্রথম কবিতার বই 'প্রথমা' প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালে। বৈপ্লবিক চেতনাসিক্ত মানবিকতা তাঁর কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য।
তত দিনে তাঁর ছোটগল্পের তিনটি বই বেরিয়ে গেছে - 'পঞ্চশর', 'বেনামী বন্দর' আর 'পুতুল ও প্রতিমা'। তাঁর অমর চরিত্র ৭২ নং বনমালী নস্কর লেনের মেসবাড়ির বাসিন্দা ঘনাদা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪৫ সালে।
প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রথম বাঙালি সাহিত্যিক যিনি নিয়মিত কল্পবিজ্ঞান বা বিজ্ঞানভিত্তিক উপন্যাস ও গল্প রচনায় মনোনিবেশ করেন। তাঁর রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কল্পবিজ্ঞান গল্প ও উপন্যাসের নাম:
ছোটোগল্প : "কালাপানির অতলে", "দুঃস্বপ্নের দ্বীপ", "যুদ্ধ কেন থামল", "মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী", "হিমালয়ের চূড়ায়", "আকাশের আতঙ্ক", "অবিশ্বাস্য", "লাইট হাউসে", "পৃথিবীর শত্রু", "মহাকাশের অতিথি", "শমনের রং সাদা"। বড়ো গল্প ও উপন্যাস : পিঁপড়ে পুরাণ, পাতালে পাঁচ বছর, ময়দানবের দ্বীপ, শুক্রে যারা গিয়েছিল, মনুদ্বাদশ, সূর্য যেখানে নীল।
এ ছাড়া আকাশবাণীর উদ্যোগে লিখিত ‘সবুজ মানুষ’ নামে চার অধ্যায়ের বারোয়ারি কল্পবিজ্ঞান কাহিনির প্রথম অধ্যায় রচনা করেন প্রেমেন্দ্র মিত্র। অবশিষ্ট তিনটি অধ্যায় লিখেছিলেন অদ্রীশ বর্ধন, দিলীপ রায়চৌধুরী ও সত্যজিৎ রায়। চলচ্চিত্র জগৎ
পথ বেঁধে দিল, রাজলক্ষ্মী (হিন্দি), নতুন খবর, কালোছায়া, কুয়াশা তাঁর পরিচালিত ছবি। এ ছাড়াও তিনি বহু সিনেমার কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও উপদেষ্টা ছিলেন।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019