মহাশ্বেতা দেবী একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলন কর্মী। তিনি ১৯২৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাঁওতালসহ অন্যান্য আদিবাসীর ওপর কাজ এবং লেখার জন্য বিখ্যাত। তাঁর লেখা শতাধিক বইয়ের মধ্যে হাজার চুরাশির মা অন্যতম। তিনি ১৯৯৭ সালে রামন ম্যাগসেসে পুরস্কার, ২০০৬ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ছাড়াও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০০৭ সালে সার্ক সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
মহাশ্বেতা দেবী মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা মনীশ ঘটক ছিলেন কল্লোল যুগের প্রখ্যাত সাহিত্যিক এবং তাঁর কাকা ছিলেন বিখ্যাত চিত্রপরিচালক ঋত্বিক ঘটক। মহাশ্বেতা দেবী শিক্ষালাভের জন্য শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজীতে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি ১৯৬৪ সালে বিজয়গড় কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। এই সময়েই মহাশ্বেতা দেবী একজন সাংবাদিক এবং লেখিকা হিসাবে কাজ করেন। পরবর্তী কালে তিনি বিখ্যাত হন মূলত পশ্চিমবাংলার আদিবাসী এবং নারীদের ওপর তাঁর কাজের জন্য। তিনি বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে বিভিন্ন আদিবাসী এবং মেয়েদের উপর শোষণ এবং বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর উল্লেযোগ্য গ্রন্থ : অরণ্যের অধিকার, নৈঋতে মেঘ, অগ্নিগর্ভ, গণেশ মহিমা, চোট্টি মুণ্ডা, তীর, শালগিরার ডাকে, নীল ছবি, বন্দোবস্তী, আই সি পি ৩৭৫, সাম্প্রতিক, প্রতি চুয়ান্ন মিনিটে, মুখ, কৃষ্ণা দ্বাদশী, ৬ ডিসেম্বরের পর, বেনে বৌ, মিলুর জন্য, ঘোরানো সিঁড়ি, স্তনদায়িনী, লায়লী আশমানের আয়না, আঁধার মানিক, যাবজ্জীবন, শিকার পর্ব, অগ্নিগর্ভ, ব্রেস্ট গিভার, ডাস্ট অন দ্য রোড, আওয়ার ননভেজ কাউ, বাসাই টুডু, তিতু মীর, রুদালী, ঊনত্রিশ নম্বর ধারার আসামী, প্রস্থানপর্ব, ব্যাধখণ্ড। মহাশ্বেতা দেবীর প্রথন স্বামী ছিলেন বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব বিজন ভট্টাচার্য। তাঁদের সন্তান নবারুণ ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যের এক জন প্রখ্যাত সাহিত্যিক ছিলেন।
মহাশ্বেতা দেবী বেশ কিছু সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনেও অংশগ্রহণ করেন। পশ্চিমবঙ্গের জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে বিদ্বজ্জনদের মধ্যে তিনি প্রথম সারিতে ছিলেন।
সূত্র: salekkhokon.me
সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/11/2020