বিশিষ্ট কবি রফিক আজাদ টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার জাহিদগঞ্জের এক অভিজাত পরিবারে ১৯৪৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। সেই হিসেবে প্রতি বছর ১ ফাল্গুন কবি রফিক আজাদের জন্মদিন পালন করা হয়। রফিক আজাদের বাবা সলিম উদ্দিন খান ছিলেন সমাজসেবক এবং মা রাবেয়া খান আদর্শ গৃহিণী। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ।
১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র রফিক ভাষা শহীদদের স্বরণে বাবা-মায়ের কঠিন শাসন অস্বীকার করে খালি পায়ে মিছিল করেন। ভাষার প্রতি এই ভালোবাসা পরবর্তী জীবনে তাকে তৈরি করেছিল একজন কবি হিসেবে, আদর্শ মানুষ হিসেবে। ১৯৫৬ সালে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় একবার বাবার হাতে মার খেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। উদ্দেশ্য, পি.সি সরকারের কাছে ম্যাজিক শেখা। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ স্কুলের হেডমাস্টার তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়িতে পাঠান। কালিহাতি হাই স্কুলে পড়ার সময় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সতীর্থ মাঈন উদ্দিন আহমদের সঙ্গে। সে ছিল ক্লাসের ফার্স্ট বয় এবং অত্যন্ত মেধাবী। সাহিত্যপাঠে আগ্রহ ছিল তার। এই মাঈনই রফিক আজাদের আড্ডার প্রথম গুরু। হামিদপুরে তার সঙ্গে শুরু হয় তুখোড় আড্ডা। তার মুখেই প্রথম মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম শোনেন। দিবারাত্রির কাব্য, পুতুল নাচের ইতিকথা, পদ্মানদীর মাঝি প্রভৃতি উপন্যাসের সঙ্গে পরিচিত হন। অবাধ স্বাধীনতা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় পড়ে নবম শ্রেণিতে ভালোভাবে পাস করতে পারলেন না আড্ডাপ্রিয় রফিক আজাদ। মাঈনও প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানে চলে আসে। আড্ডার অন্য বন্ধুদের অনেকেই একাধিক বিষয়ে ফেল করে বসল। অবশেষে ব্রাহ্মণশাসন হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন।
রফিক আজাদ বাংলা অ্যাকাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’-এর সম্পাদক ছিলেন। ‘রোববার’ পত্রিকায়ও রফিক আজাদ নিজের নাম উহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন। টাঙ্গাইলের মাওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলার প্রভাষক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। রফিক আজাদের প্রেমের কবিতার মধ্যে নারীপ্রেমের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে — ‘অসম্ভবের পায়ে’, ‘সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’, ‘প্রেমের কবিতা’, ‘সশস্ত্র সুন্দর’, ‘এক জীবনে, ভালোবাসার কবিতা’ প্রভৃতি।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020