তাপমাত্রা বা উষ্ণতা হচ্ছে কোন বস্তু কতটা গরম (উষ্ণ) বা ঠান্ডা (শীতল) তার পরিমাপ। এবং তাপশক্তি পরিবহণ দ্বারা সবসময় উষ্ণতর বস্তু থেকে শীতলতর বস্তুতে প্রবাহিত হয়। উষ্ণতা কোন বস্তুর মোট তাপের পরিমাপ নয়, তাপের "মাত্রা"র পরমাপ। এই মাত্রা বস্তুর কোন অংশের স্থানীয় তাপজনিত আণবিক চাঞ্চল্যের পরিমাণের উপর নির্ভর করে।
পরম তাপমাত্রা এমন একটি উষ্ণতা সূচক যা বস্তুর তাপজনিত গতিশক্তির একটি পরিচায়ক।
তাপমাত্রার তিনটি স্কেল ব্যাবহার হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার হয় সেলসিয়াস স্কেল। কিন্তু অনেকসময় ফারেনহাইট স্কেলও ব্যাবহার হয়। আর পদার্থবিজ্ঞানে বেশি ব্যাবহার হয় কেলভিন স্কেল। পরম শুণ্য তাপমাত্রা থেকে কেলভিন স্কেল শুরু হয়। ১ কেলভিন= ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও সেলসিয়াস স্কেল এর শুরু ২৭৩ ডিগ্রি কেলভিন থেকে। ২৭৩° কেলভিনএ জল জমে বরফ হয়, তাই একে সেলসিয়াস স্কেলের শুরু (০° সেলসিয়াস) ধরা হয়।
১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : হাইকে কামেরলিং ওনেস
বিংশ শতাব্দীতে পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ্যায় একটি মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন নেদারল্যান্ডের বিজ্ঞানী হাইকে কামেরলিং ওনেস (১৮৫৩-১৯২৬ খ্রি) অতি নিম্ন তাপমান বিষয়ে পরীষ্কা-নিরীক্ষা করে।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রায়োজেনিক ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে। ল্যাবরেটরিটি অবশ্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল অনুর মধ্যে স্থিরতড়িৎ ভ্যান্ডারওয়াল বলের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। বেশ কয়েকটি বৈপ্লবিক পরীক্ষা করার ফলে এর নাম ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে ওনেস হিলিয়াম গ্যাসকে তরলায়িত করে এক যুগান্তকারী স্বাক্ষর রাখলেন। এটিকে মনে করা হয় ‘পরম শূন্যতাপমান’ (অ্যাবসোলিউট জিরো) অন্বেষণে প্রথম ধাপ।
অতিপরিবাহিতা-তত্ত্ব বিষয়ে এক জন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব হিসাবে ধরা হয় ওনেসকে। অতিপরিবাহিতা-তত্ত্ব অনুযায়ী কোনও ধাতুর তড়িতী বাধা (সুপারকন্ডাকটিভিটি) শূন্য হয়ে যায় অতি নিম্ন তাপমাত্রায়। লাইডেন ল্যাবরেটরিতে পারদ-এর উপর পরীক্ষা করে ওনেস অতিনিম্ন তাপমাত্রা পাওয়ার এক নিখুঁত কৃৎকৌশল আবিষ্কার করেন, যার জন্য তিনি ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/17/2019