আবিষ্কার : ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : উইলিয়াম কুলিজ
১৮৯৫ সালে উহলহেলোম রন্টজেন এক্সরে আবিষ্কার করেন। এক্সরে একটি তাড়িৎ চৌম্বক বিকিরণ। এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য টেন ইনভার্স টেন মিটার যা সাধারণ আলোর তুলনায় অনেক কম। এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম থাকার কারনে যে কোনো পদার্থকে খুব সহজেই ভেদ করতে পারে অর্থাৎ এর ভেদন ক্ষমতা বেশি। এটি একটি অদৃশ্য রশ্মি। এক্স টিউবে এক্সরে তৈরি হয়। বায়ুশূন্য কাঁচনলের দুই প্রান্তে দুটি ইলেক্ট্রোড (একটি ক্যাথোড অপরটি অ্যানোড) ব্যবহার করে ক্যাথোড প্রান্তে টাংস্টেন এর তৈরি ফিলামেন্ট পেঁচিয়ে তাতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে তা সহজেই উত্তপ্ত হয়ে যায়। অ্যানোড প্রান্তের সাথে ক্যাথোড প্রান্তের উচ্চ বিভব পার্থক্য থাকায় ( ক্যাথোড প্রান্ত উত্তপ্ত হওয়ায়) ক্যাথোড প্রান্তের ইলেক্ট্রন গুলো মুক্ত হয়ে অনেক গতি নিয়ে অ্যানোডকে আঘাত করে। পরবর্তীতে ইলেক্ট্রনের গতি থেমে যায় তথা এই গতিশক্তি তাড়িৎচৌম্বক তরঙ্গে রূপান্তিত হয়। এভাবে এক্সরে বা অজানা রশ্মি তৈরি হয়।
রঞ্জন রশ্মির সাহায্যে রোগ নির্ণয়ের যে প্রথা আজ চালু রয়েছে, কোনও সন্দেহ নেই তার জন্য পুরো কৃতিত্ব হল ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কৃত কুলিজ এক্স-রশ্মি টিউব। কুলিজের টিউব-এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল উচ্চ ভ্যাকুয়াম এবং ইলেকট্রনের উত্স হিসাবে উত্তপ্ত ফিলামেণ্ট। টিউবের ভিতরে এত কম গ্যাস আছে যে এক্স-রশ্মি উত্পাদনে এর কোনও ভূমিকা নেই ।
কুলিজ টিউবের মূল আকৃতি হল একটি বর্তুলাকার বালব, দু’টি বেলনাকৃতি মুখোমুখি ‘বাহু’-সহ। বাহুদু’টি হল ক্যাথোড ও অ্যানোড। টিউবের পৃষ্ঠতলের আয়তন বেশি রাখা হয়েছে তাপ বিকিরণ বর্ধিত করার জন্য। তা ছাড়া বড় মাপ হলে ভিতরের প্রতি একক ক্ষেত্রে টাংস্টেন কম অবক্ষিপ্ত হবে।
ক্যাথোড-ফিলামেণ্ট যত তাপিত হবে তত বেশি ইলেকট্রন বিচ্ছুরণ হবে; ধাবিত হবে ধনাত্মক অ্যানোডের দিকে। ইলেকট্র্নগুলি যখন অ্যানোডকে আঘাত করবে, তা দিকভ্রষ্ট হয়ে এক্স-রশ্মি নির্গত করবে অবিচ্ছিন্ন ভাবে। এক্স-রশ্মির সর্বোচ্চ শক্তির পরিমাণ হল ইলেকট্রনের গতীয় শক্তির সমান ।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019