অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

গোড়ার কথা

গোড়ার কথা

একটা আখ্যান দিয়ে শুরু করা যাক। সে সময়টা ঊনবিংশ শতাব্দীর একেবারে শেষ দিকে - শোনা যাচ্ছে বিংশ শতাব্দীর পদধবনি। বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী লর্ড কেলভিন (উইলিয়াম থমসন, ১৮২৪-১৯০৭) উক্তি করলেন :

There is nothing new to be discovered in physics now, all that remains is more and more precise measurement

এখন আর পদার্থবিদ্যায় কোনও নতুন আবিষ্কারের সম্ভাবনা নেই; যা বাকি রয়েছে তা হল সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর মাপন।

তখনকার কথা ধরলে লর্ড কেলভিনের কথা অতিশয়োক্তি বলে মনে হয়নি কারণ, কয়েক বছর আগেই, ১৮৯৫ থেকে ১৮৯৭ সালে চার চারটি বিরাট আবিষ্কার হয়েছে। এগুলো হল রঞ্জন রশ্মি, ইলেকট্রন, জিমান এফেক্ট ও তেজষ্ক্রিয়তা।

সেই সময় তাঁর অজ্ঞাতে, তখন বোধকরি, জার্মানির এক কুঠিতে মোমবাতির আলোতে, মাক্স প্লাঙ্ক লিখে চলেছেন তাঁর বিখ্যাত গবেষণাপত্র যাতে মত প্রকাশ করলেন – শক্তি (এনার্জি) নির্মিত হয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ‘প্যাকেট’ সংযোগে, যাকে বলা যতে পারে ‘কোয়ান্টা’। তখনও জার্মানির ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আসেনি, আটলান্টিক পার হয়ে সুদূর আমেরিকায় এডিসন এবং টেসলা প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। প্লাঙ্কের প্রস্তাব বিজ্ঞানের মানচিত্রকে দিল পাল্টে, বিজ্ঞান ঝাঁপিয়ে পড়লো ‘ম্যাক্রো’ বা ‘অতি’ থেকে ‘মাইক্রো’ বা ‘সূক্ষ্ম’-তে। জীবনের বাকি প্রায় সাতচল্লিশ বত্সরে প্লাঙ্ক দেখেছেন বিদ্যুতের পথচলা। যখন মারা গেলেন, পৃথিবীতে এলো প্রথম ‘কম্পিউটার’ -- শতাব্দীর সব থেকে বড় বিস্ময়।

বস্তুত প্লাঙ্কের ‘কোয়ান্টা-তত্ত্ব’ এবং আইনস্টাইনের ‘বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ’ বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান-গবেষণায় এক আলোড়ন সৃষ্টি করলো, যার প্রভাব গড়িয়ে চলে এসেছে একবিংশ শতাব্দীতে। শুধু পদার্থবিদ্যায় নয়, বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা এবং প্রযুক্তিবিদ্যা গভীর ভাবে প্রভাবিত হল এবং এই প্রভাব গবেষণাগারের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ছড়িয়ে পড়ল সাধারণ মানুষের জীবনে নানা ভাবে।

বিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা কিন্তু সব দিক দিয়ে মানুষের সুখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি। মানুষের হাতে এই বিশাল ‘সম্ভাবনা’ এনে দিয়েছে অসাম্য ও লোভ ; ফলে দু’টি বিশ্বযুদ্ধ ছাড়াও মানুষ আজ পেয়েছে ‘ভোগ অর্থনীতি’ -- উন্নয়নের এই মডেল ধীরে ধীরে গ্রাস করেছে সারা বিশ্বকে। এর প্রতিফলন হল পরিবেশ দূষণে।

এটা ঠিক নয় যে বিজ্ঞানীরা আমাদের সাবধান করে দেননি। আজ থেকে ১২৪ বছর আগে জেমস হ্যানসেন (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাসা গডার্ড ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ), ১৮৮৮ সালে মার্কিন সিনেটে এক সাক্ষ্যদান প্রসঙ্গে অবহিত করেছিলেন যে ‘গ্রিনহাউস ক্রিয়াকলাপ’ ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বিশ্বের তাপমান বাড়িয়েছে ০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৮৯৬ সালে সুইডিশ রসায়ন বিজ্ঞানী শান্তে আরহেনিয়াস দেখিয়েছিলেন যে, বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে যে ভারসাম্য বর্তমান, তাকে বিঘ্নিত করবে কয়লা-দহন। তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, অনিয়ন্ত্রিত ভাবে কয়লা-দহন বায়ুমণ্ডলে এত কার্বন ডাইঅক্সাইড যুক্ত করবে যে বিশ্বের তাপমান বর্ধিত হবে অকল্পনীয় ভাবে।

একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানীদের সামনে রয়েছে দু’টি আশু সমস্যা : ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার মুখে কী ভাবে খাদ্য জোগাবেন, এবং কী ভাবে ‘জলবায়ুর পরিবর্তন’- এর মোকাবিলা করবেন।

সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস

সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate