ঘটনা : ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : রয় প্ল্যাঙ্কেট ও জ্যাক রেবক ,
১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে জনৈক বিজ্ঞানী শীতলীকরণের পদার্থের উপর কাজ করছিলেন, তা করতে করতে নিজের অজান্তেই তৈরি করলেন একটি নূতন পদার্থ। রয় প্লাঙ্কেট নামক ঐ রসায়নবিদ যুবকের এক সাহসী সিদ্ধান্ত বিশ্বকে এনে দিল টেফলন।
প্লাঙ্কেট অনুমান করলেন যে একটা নূতন প্রবাহ-নিবারক তৈরি করা সম্ভব টেটরাফ্লুরোইথিলিন অথবা টিইই-র সঙ্গে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড যুক্ত করে। পরীক্ষার সময়ে প্লাঙ্কেট ও তাঁর সহকারী জ্যাক রিবোক ব্যবহার করলেন ট্যাঙ্ক যেগুলি ভর্তি সংকুচিত টিইই দ্বারা। তাঁরা ট্যাঙ্কগুলি কঠিন কার্বন ডাইঅক্সাইডের (ড্রাই আইস) ভিতরে রেখে দিলেন যাতে ভিতরের গ্যাস বেশি সম্প্রসারিত না হয়।
১৯৩৮ সালের ৬ এপ্রিল প্লাঙ্কেট ও রিবোক ট্যাঙ্কের ভালভ খুললেন। তাঁরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলেন যে কিছুই বের হল না। প্লাঙ্কেট ও রিবোক ট্যাঙ্কগুলি ওজন করে দেখলেন যে ট্যাঙ্কগুলি এখনও ভর্তি আছে। এ বার তাঁরা ভালভগুলি খুলে দেখলেন যে সাদা চোকলা বেরিয়ে আসল। প্ল্যঙ্কেট তৎক্ষণাৎ একটি ট্যাঙ্ককে করাত দিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত করে দেখলেন যে ভিতরে সাদা মোমের মতন পদার্থ। তিনি পরীক্ষার খাতায় লিখলেন, “ অ্যা হোয়াইট সলিড মেটেরিয়াল ওয়াজ অবটেন্ড, হুইচ ওয়াজ সাপোজড টু বি অ্যা পলিমারাইজড প্রডাক্ট”।
এটি সাধারণ ভাবে প্রতীয়মান ছিল যে টিইই বহূলীভুত হয় না। কিন্তু প্লাঙ্কেট না থেমে এই নতুন পদার্থ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেলেন।
তিনি নতুন যৌগিক পদার্থটি নিয়ে দু'দিনের মাথায় দেখলেন যে এটি তাপীয়-প্লাস্টিক, তাপমান গনগনে হলে পদার্থটি গলে এবং ফোটে।
পদার্থটি অদ্রাব্য, প্রায় যে কোনও তরল পদার্থে যেমন, ঠান্ডা ও গরম জল, অ্যাসিটোন, ইথার, অ্যাসিড এবং অ্যালকোহল। এটি সোলডারিং আয়রন-এর তলায় পোড়ে না বা গলে না, পচে না ফোলে না, রৌদ্রে এর অবক্ষয় হয় না।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019