অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

তুষার যুগের এক নতুন ঘূর্ণন

তুষার যুগের এক নতুন ঘূর্ণন

তুষার যুগ

আমাদের এ পৃথিবীর বয়স কম নয়। ভূ-তাত্ত্বিকদের হিসেবে পৃথিবীর বয়স অন্ততপক্ষে ৪৬০ কোটি বছর। কিন্তু এরও গোড়ার দিকের ১০০ কোটি বছরের ইতিহাস আমরা কিছু জানি না। যে কালের কথা আমরা কিছু জানতে পেরেছি, তার ব্যাপ্তি প্রায় ৬০ কোটি বছর। গবেষণার সুবিধার্থে ভূ-তাত্ত্বিকরা পৃথিবীর বয়সকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেছেন। সাম্প্রতিককাল থেকে শুরু করে ১০ হাজার বছর আগে পর্যন্ত সময়কে বলা হয়েছে, ‘হলোসিন’ যুগ। ১০ হাজার থেকে ১০ লক্ষ বছর সময়ের নাম ‘প্লায়াস্টোসিন’ যুগ। এই প্লায়াস্টোসিন যুগেই অন্ততঃ চারবার পৃথিবীতে তুষার যুগ এসেছে।

তুষার যুগ। ইংরেজিতে ‘আইস এইজ’। কেন পৃথিবীতে দেখা দেয় শীতল তুষার যুগ? তার কারণ বহু। সৌরজগৎ যখন কোন ঠাণ্ডা মেঘমালার ভেতর দিয়ে পথ করে নেয়, তখন মেঘের ছোঁয়ায় পৃথিবীর যাবতীয় জলরাশি বরফের ছাইয়ে পরিণত হয়। আবার অনেক সময় সূর্যের শরীরে সৌর কলঙ্ক বেড়ে যায়। ফলে কমে যায় তার বিকিরণ ক্ষমতা। হ্রাস পায় তাপশক্তি। আরেকটি মজার ব্যাপার ঘটে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে নিয়ে। পৃথিবীর আবহমণ্ডলে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড রয়েছে তা কমে যেতে পারে, যদি পৃথিবীর গাছপালা বেশি মাত্রায় সেটা শুষে নেয়।

সূর্য হতে পৃথিবী পৃষ্ঠে বিকীর্ণ তাপশক্তির এক বিরাট অংশ শুষে নেয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড। সেটা পৃথিবীতে উত্তাপ ধরে রেখে জীবজগতের যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে। এখন আবহমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের বেশি ঘাটতি দেখা দিলে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে যায়। শুরু হয় ঠান্ডা আবহাওয়া। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জীবজগৎ। ভেঙ্গে পড়ে প্রাণির খাদ্য-শিকল। মারা পড়ে বহু প্রাণী। পৃথিবীর চলমানতার দরুন মহাদেশগুলো মেরু অঞ্চলে ভিড় করলেও দেখা দিতে পারে তুষার যুগ।

ভূ-তাত্ত্বিকদের মতে পৃথিবীর শেষ তুষার যুগ দেখা দিয়েছে প্লায়াস্টোসিন যুগের শেষ ভাগে। এর নাম ‘গ্রেট আইস এইজ’। এটা স্থায়ী ছিল প্রায় দশ হাজার বছর। এ তুষার যুগে কয়েকশ মিটার পুরু বরফের স্তূপ গড়ে উঠেছিল। এটা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে গ্রিনল্যান্ড ও কুমেরু বৃত্তে। কানাডা, সাইবেরিয়া ও উত্তর ইউরোপে পাওয়া কিছু ফসিলে এর প্রমাণ মেলে।

তুষার যুগের এক নতুন ঘূর্ণন

আবিষ্কার : ১৯২০ খ্রিস্টাব্দ

বিজ্ঞানী : মিলুটিন মিলানকোভিচ

ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বিজ্ঞানীরা ভূতাত্ত্বিক ও জীবাশ্মের রেকর্ড দেখে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে পৃথিবী একটা হিমক্রিয়ার বশে ছিল দীর্ঘ সময় ধরে। কিন্তু হিমযুগের কারণ তাঁরা ধরতে পারেননি।

১৯২০ সালে সার্বিয়ার বিজ্ঞানী মিলুটিন মিলানকোভিচ একটি সমাধান দিলেন। জোসেফ আধেমা এবং জেমস ক্রোল-এর পূর্বেকার জ্যোতির্বিজ্ঞানসম্ভূত তত্ত্বের ভিত্তিতে তিনি ধৈর্যসহকারে পরিমাপ করলেন সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর অক্ষপথের পরিবর্তন, হিসাব করলেন মহাকর্ষীয় প্রভাব, অধ্যয়ন করলেন পৃথিবীর সম্পর্কে গ্রহ ও তারাদের অবস্থান। তিনি দেখালেন, মহাশূন্যে আমাদের গ্রহের কক্ষপথ নির্ভরশীল তিনটি আবর্তনীয় (সাইক্লিক্যাল) পরিবর্তনের উপর।

প্রথমত, পৃথিবীর কক্ষপথের উৎকেন্দ্রতা (এক্সেনট্রিসিটি)। প্রায়-বৃত্তাকার থেকে উপবৃত্তকারে পরিণত হচ্ছে এক ১০০,০০০ বত্সরের চক্র-অনুসারে।

দ্বিতীয়ত, পৃথিবীর অক্ষের ক্রান্তিকোণ (অবলিকুইটি), যা এর বিভিন্ন গোলার্ধের ঋতু স্থির করে; এই ক্রান্তিকোণ ৪১,০০০ বত্সর-চক্রে ওঠা-পড়া করে ২২.১ ডিগ্রি থেকে ২৪.৫ ডিগ্রির মধ্যে।

তৃতীয়ত, পৃথিবীর ঘূর্ণনাক্ষ (অ্যাক্সিস অফ রোটেশন) একটা ঘূরন্ত লাট্টুর মতো, যার জন্য পৃথিবী ২৪,০০০ বত্সর-চক্রে অয়নচলনে (প্রিসেশন)।

এই সবই ব্যাখ্যা দেয় হিমক্রিয়ার, যার ফলে পৃথিবীতে আসা সৌর-বিকিরণে ঋতুজ এবং অক্ষাংশীয় পরিবর্তন হয়। জলবায়ু-পরিবর্তন বুঝতে এটি একটি তাত্পর্যপূর্ণ তত্ত্ব।

সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস

সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate