আবিষ্কার : ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : কার্ল ডেভিড অ্যান্ডারসন
২০০৮ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘এপিএস হিস্টোরিক সাইটস কমিটি’র চেয়ারম্যান জন রিগডেন ক্যালটেক-কে একটি ফলক উপহার দিলেন অধ্যাপক কার্ল ডেভিড অ্যান্ডারসন এবং তাঁর আবিষ্কার পজিট্রন-এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে। ১৯৩২ সালে অ্যান্ডারসন ছিলেন ক্যালটেক-এর পদার্থ বিভাগে এক জন ‘পোস্ট ডক’।
সে সময় ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাদোনায় রবার্ট এন্ড্রুজ মিলিকানের অধীনে গড়ে ওঠে পরীক্ষামূলক গবেষণার বহু প্রসারিত ক্ষেত্রে এক সক্রিয় দল। মিলিকানের সুযোগ্য উত্তরসূরি হলেন অ্যান্ডারসন। তিনি ১৯৩০ সালে মেঘকক্ষ তৈরি করার কাজ শুরু করেন এবং চুম্বক-ক্ষেত্র প্রয়োগ করে চুম্বকক্ষেত্রে কণাদের বিচলন পরীক্ষা করেন। ১৯৩২ সালের ২ আগস্ট তিনি একটি ছবি পান যাতে দেখা যায় যে একটি ইলেকট্রন সিসার পাত অতিক্রম করে মেঘকক্ষে থেমে যাচ্ছে। গতির দিক নিশ্চিত ছিল কারণ সিসার পাত অতিক্রম করার সময় ইলেকট্রন ভরবেগ হারায় যার ফলে পথের বক্রতা বেড়ে যায়। ইলেকট্রনের গতি হওয়া উচিত উপরের দিকে, কিন্তু নির্দিষ্ট দিকে গতিবেগ, চুম্বকক্ষেত্রের নির্দিষ্ট দিক থাকার দরুণ যে বক্রতা পাওয়া গেল তা ধনাত্মক তড়িতাধানযুক্ত কণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে সাধারণ ইলেকট্রনের সঙ্গে নয়। তবে কি কণাটি প্রোটন? সেটা সম্ভব নয় যে হেতু একটি চুম্বকক্ষেত্রে সিসার পাতকে অতিক্রম করার মতো ভরবেগ নিয়ে চলা প্রোটনের গতিপথ দৃষ্ট বক্রতা দেখাবে না। বিপরীতক্রমে যদি কণার গতিপথ বক্র হয় তবে তার সিসার পাত অতিক্রম করার উপযুক্ত ভরবেগ থাকবে না। বিস্তারিত আলোচনায় একটিমাত্র সিদ্ধান্ত আসে যে আমরা ধনাত্মক ইলেকট্রন বা পজিট্রনের মোকাবিলা করছি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে নোবেল-বিজ্ঞানী পল ডিরাক ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ধনাত্মক ইলেকট্রনের কথা প্রথম উল্লেখ করেন।
তা ছাড়া, আইরিন কুরি ও জোলিও অ্যান্ডারসন আগেই মেঘকক্ষে পজিট্রন দেখতে পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা তখন ব্যাখ্যা দিলেন, নূতন গতিপথগুলি উত্সের দিকে এগিয়ে আসা ইলেকট্রনদের, উত্স থেকে বেরিয়ে আসা পজিট্রন নয়।
পজিট্রন আবিষ্কারের জন্য ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ অ্যান্ডারসন নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019