আবিষ্কার : ১৯০২-০৩ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : ওয়াল্টার সাটন, থিওডর বোভারি (স্বতন্ত্র ভাবে)
ক্রোমোজোম হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান।
ক্রোমোজোম নিউক্লিয়াসের নিউক্লিওপ্লাজমে বিস্তৃত এবং সূত্রাকার ক্রোমাটিন দ্বারা গঠিত। বিজ্ঞানী Eduard Strasburger ১৮৭৫ সালে সর্বপ্রথম ক্রোমোজোম আবিষ্কার করেন। প্রজাটির বৈশিষ্ট্যভেদে এর ডিপ্লয়েড সংখ্যা ২ থেকে ১৬০০ পর্যন্ত হতে পারে। ডিপ্লয়েড হলো দুই সেট ক্রোমোজোম, যার একসেট পিতা থেকে আসে এবং আর একসেট মাতা থেকে আসে। একটি ক্রোমোজোম সাধারণত ৩.৫ থেকে ৩০.০ মাইক্রন দৈর্ঘ্যে ও ০.২ থেকে ২.০ মাইক্রন প্রস্থে্ হয়ে থাকে (১ মাইক্রন=০.০০১ মিলিমিটার)। ক্রোমোজোমের কাজ হলো মাতাপিতা হতে জিন সন্তানসন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া। মানুষের চোখের রং, চুলের প্রকৃতি, চামড়ার গঠন ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য ক্রোমোজোম কর্তৃক বাহিত হয়ে বংশগতির ধারা অক্ষুন্ন রাখে। এ কারণে ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌতভিত্তি (Physical basis of heredity) বলে আখ্যায়িত করা হয়।
বোভারি-সাটন ক্রোমোজোম তত্ত্ব (বা উত্তরাধিকারের ক্রোমোজোম তত্ত্ব বা সাটন-বোভারি তত্ত্ব) হল জেনেটিকসের একটি মৌলিক তত্ত্ব যার দ্বারা ক্রোমোজোমকে চিহ্নিত করা যায় জেনেটিক-উপকরণের বাহক হিসাবে । মেন্ডেল-এর উত্তরাধিকার বিষয়ে নিয়মগুলিকে সঠিক ভাবেই বিবৃত করেছে এই তত্ত্ব ।
১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে ওয়ালথার ফ্লেমিং ক্রোমোজোম এবং সালামান্ডারের ডিম-এ মাইটোসিস, পরোক্ষে নিউক্লিয়াস বিভাজন আবিষ্কার করেন । পরে আউগুস্ট ভাইসমান মায়োসিস-এর সঙ্গে মেন্ডেলের তত্ত্বের উত্তরাধিকার সূত্রের যোগাযোগ দেখান। কিন্তু ভাইসম্যান ক্রোমোজোম-বিভাজনকে মেন্ডেলের উত্তরাধিকারের উপাদান হিসাবে অনন্যতা দেখাননি।
উত্তরাধিকার বিষয়ে ক্রোমোজোম-তত্ত্ব এল ওয়াল্টার সাটন-এর উপস্থাপনা থেকে ১৯০২ ও ১৯০৩ সালে। প্রায় একই সময়ে প্রকাশিত হল থিওডর বোভারি-র স্বতন্ত্র উপস্থাপনা। সাটনের গবেষণা ফড়িংদের নিয়ে, বোভারি-র সামুদ্রিক শজারুদের নিয়ে। সাটন দেখালেন যে ফড়িং-এর ক্রোমোজোম ঘটে পিতা ও মাতার ক্রোমোজোমের যুক্ত ভাবে যা মায়োসিসের সময়ে পৃথক হয়ে যায় এবং মেন্ডেলীয় বংশগতির নিয়মনুসারে। অন্য দিকে বোভারি দেখালেন সমস্ত ক্রোমোজোমকে অবশ্যই হাজির থাকতে হবে বিশেষ ভ্রূণ বিকাশের জন্য।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019