আবিষ্কার : ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : নিলস্ হেনরিক ডাভিড বোর
নিল্স হেনরিক ডেভিড বোর পরমাণু গঠনের আধুনিক তত্ত্বের অন্যতম প্রবক্তা ও বিখ্যাত পদার্থবিদ। এই ডেনিশ পদার্থবিজ্ঞানী ১৯২২ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বোরের পরমাণু মডেল রসায়নের ইতিহাসে আজও বিখ্যাত হয়ে আছে। তিনি মূলত অবদান রাখেন, আণবিক গঠন এবং কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের উপর যার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। তিনি পরমাণু মডেলকে সূর্যের কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান গ্রহের সাথে তুলনা করেন যেখানে পরমাণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস অবস্থিত এবং নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন অবস্থিত।
১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী নিলস্ হেনরিক ডাভিড বোর পরমাণুর একটি মডেল প্রস্তাব করলেন, যাতে পরমাণুর কেন্দ্রে আছে একটি ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াস, যার চতুর্দিকে ঘুরছে এক বা একাধিক ইলেকট্রন -- অনেকটা সৌরমণ্ডলের মতন, কিন্তু নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনের মধ্যে বাঁধন হল অভিকর্ষ নয়, স্থিরতড়িৎ বল। এটি আগেকার মডেল যথা, ‘কিউবিক মডেল’ (১৯০২ খ্রি), ‘প্লাম-পুডিং মডেল’ (১৯০৪ খ্রি), ‘স্যাটারনিয়ান মডেল’ (১৯০৪ খ্রি) এবং ‘রাদারফোর্ড মডেল’(১৯১২ খ্রি)-র উত্কর্ষসাধন। বস্তুত বোর-মডেল হল রাদারফোর্ড মডেলের কোয়ান্টাম-তত্ত্ব ভিত্তিক উত্কর্ষ, যার জন্য অনেক সময় দু’টিকে যুক্ত করে বলা যায় ‘রাদারফোর্ড-বোর মডেল’।
বোর-এর তত্ত্বের মৌলিক নীতিগুলি হল : (১) যে কোনও কক্ষপথে ইলেকট্রনের শক্তি হল ধ্রুব (কনস্ট্যান্ট), যতক্ষণ কোনও ইলেকট্রন নিজস্ব কক্ষপথে থাকবে এটি শক্তি শোষণ করবে না বা বিকিরণ করবে না। (২) ইলেকট্রনের কক্ষপথ হল বৃত্তাকার। অনেক সময় এই কক্ষপথকে উল্লেখ করা হয় ‘শক্তিস্তর’ নামে। (৩) যদি কোনও ইলেকট্রন উঁচু শক্তিস্তর থেকে নিচু শক্তিস্তরে লাফিয়ে যায়, এটি একটি নির্দিষ্ট মানের শক্তি বিকিরণ করে। সেই রকম, যদি কোনও ইলেকট্রন নিচু শক্তিস্তর থেকে উঁচু শক্তিস্তরে লাফিয়ে যায়, এটি একটি নির্দিষ্ট মানের শক্তি শোষণ করে।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020